‘আইলো দে দৌড় আওয়ামী লীগ...’

ক্যাপশন: পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল আহম্মেদের দেওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট
ছবি: সংগৃহীত

‘আইলো দে দৌড় আওয়ামী লীগ। আগে আইছিল কমিটি নিয়া এবার আইবে করোনা লইয়া বাঁচতে হলে দৌড়। এ দুজন করোনা রুগীর চেয়েও ভয়ংকর।’ গতকাল শুক্রবার বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর ও সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ভিপি আব্দুল মান্নানকে নিয়ে দেওয়া এ স্ট্যাটাস ভাইরাল হয়েছে।

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সোহেল আহম্মেদ তাঁর ফেসবুক আইডি থেকে ওই স্ট্যাটাস দেন। এই স্ট্যাটাসকে ঘিরে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে তোলপাড় চলছে। জেলা কমিটির নির্দেশে আজ শনিবার এক জরুরি সভায় স্ট্যাটাস দানকারী আওয়ামী লীগ নেতাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কটূক্তি করে ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসের সত্যতা স্বীকার করে সোহেল আহম্মেদ প্রথম আলোকে মুঠোফোনে বলেন, ‘বর্তমানে মির্জাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। এতে ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন না করে মনগড়া কমিটি করা হয়েছে। আমি মির্জাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. আজাহার উদ্দিন মাস্টারের ছেলে। দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের পাশে থেকেছি।

বিএনপি–জামায়াতের হাতে বারবার নির্যাতিত হয়েছি। দীর্ঘদিন ধরে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেও সম্মানজনক পদ পায়নি। অথচ জীবনে কোনো দিন আওয়ামী লীগ করেনি—এমন লোককেও বর্তমান কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে, বঞ্চিত করা হয়েছে জ্যেষ্ঠ ত্যাগী নেতাদের। এসব কারণে মনের ক্ষোভ থেকেই আমি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছি।’

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘দল নিয়ে এমন কটূক্তিমূলক মন্তব্য প্রচার করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। স্ট্যাটাস দেওয়ার পর জেলা কমিটির নির্দেশে শনিবার উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি সভা আহ্বান করা হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দেওয়া ওই নেতাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান মুঠোফোনে বলেন, ‘স্ট্যাটাস দানকারী সোহেল আহম্মেদ একজন নেশাখোর। তাঁর বাবা আজাহার উদ্দিন মাস্টার মির্জাগঞ্জ উপজেলার একজন ত্যাগী নেতা ছিলেন। তাঁর প্রতি সম্মান রেখেই সোহেল আহম্মেদকে কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। তাঁকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়ার জন্য উপজেলা কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’