আইসিডিডিআরবির মতলব হাসপাতালে ১৪ দিনে ভর্তি ২ হাজার শিশু

আইসিডিডিআরবির চাঁদপুরের মতলব হাসপাতালে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের ভিড়। মঙ্গলবার দুপুরে।
প্রথম আলো।

শীতের শুরুতেই চাঁদপুর ও আশপাশের জেলার শিশুরা রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। গত ১৪ দিনে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) চাঁদপুরের মতলব হাসপাতালে ২ হাজার ৭১ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হয়েছে ১৪৮টি শিশু।

এ হিসাব ১ থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আইসিডিডিআরবির মতলব হাসপাতালের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভর্তি হওয়া এসব শিশু শূন্য থেকে পাঁচ বছর বয়সী। ভর্তি হওয়া মোট রোগীর ৮৮ শতাংশের বেশি শিশু। এ সংখ্যা বছরের স্বাভাবিক সময়ের প্রায় তিন গুণ। স্বাভাবিক সময়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন গড়ে ৫০ শিশু ভর্তি হয়। মঙ্গলবার বেলা ১টা পর্যন্ত সেখানে ভর্তি হয়েছে মোট ৭৮ জন ডায়রিয়া রোগী। এর মধ্যে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ৭০।

হাসপাতাল সূত্র আরও জানায়, ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি হওয়া শিশুদের মধ্যে চাঁদপুর সদরের ১৪৫ জন, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১০৬, হাজীগঞ্জের ৯৫, কচুয়ার ৮৭, মতলব উত্তরের ৪০, মতলব দক্ষিণের ৫২ জন আছে। এ ছাড়া কুমিল্লার বরুড়ার ১০৩ জন, বুড়িচংয়ের ৫৭, চান্দিনার ১২৬, কুমিল্লা সদরের ১১৯, দেবিদ্বারের ১২২, দাউদকান্দির ১২১, লাকসামের ৫২, মুরাদনগরের ১৩০, তিতাসের ৭৯ জন আছে। লক্ষ্মীপুর সদরের আছে ১৫৮, রায়পুরের ৬৩ ও রামগঞ্জের ৬৫ জন। অন্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, শরীয়তপুরসহ আরও কয়েকটি জেলার।

মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় আইসিডিডিআরবির মতলব হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, সেখানকার প্রতিটি ওয়ার্ডে শিশুদের উপচে পড়া ভিড়। হাসপাতালটির বহির্বিভাগেও আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা চলছে।

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার নওগাঁও গ্রামের গৃহবধূ লিলি আক্তার বলেন, ঘন ঘন পাতলা পায়খানা ও বমি হওয়ায় তাঁর এক বছরের শিশু হোসাইনকে সকালে এখানে ভর্তি করিয়েছেন। চিকিৎসকেরা খাওয়ার স্যালাইন ও বেবি জিঙ্ক খেতে দিয়েছেন। তার অবস্থা উন্নতির দিকে।

আইসিডিডিআরবির মতলব হাসপাতালের কেন্দ্রপ্রধান আল ফজল খান বলেন, পচা ও বাসি খাবার, দূষিত পানি পান এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার কারণে এত বেশি হারে শিশুরা রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। শূন্য থেকে ৬ মাস বয়সী শিশুদের মায়ের বুকের দুধ ও খাওয়ার স্যালাইন খেতে দেওয়া হচ্ছে। ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের খেতে দেওয়া হচ্ছে খাওয়ার স্যালাইন, বেবি জিঙ্ক, ডাব ও চিড়ার পানি এবং অন্যান্য স্বাভাবিক খাবার। তাঁর হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জাম ও ওষুধ মজুত রয়েছে। ঘনঘন পাতলা পায়খানা ও বমি হলে শিশুকে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।