আইসোলেশন ভেঙে আসামি নিয়ে অভিযানে ওসি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর আইসোলেশনের শর্ত ভঙ্গ করে আসামিকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে যাওয়ায় নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁর স্থলে নতুন ওসি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ওসিকে প্রত্যাহার এবং আজ বৃহস্পতিবার নতুন ওসি নিয়োগ দেওয়া হয়।

থানা ও জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ভোরে ঢাকার কদমতলী থানার মোহাম্মদবাগ এলাকা থেকে মাদ্রাসাছাত্র আবুল বাশার ওরফে সাইমন (১৩) হত্যা মামলার প্রধান আসামি মীর হোসেন ওরফে মীরাকে (২০) গ্রেপ্তার করে সোনাইমুড়ী থানা-পুলিশের একটি দল। এরপর কোভিডে আক্রান্ত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সামাদ আইসোলেশন থেকে বের হয়ে ওই আসামিকে নিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে সোনাইমুড়ী থানার আলোকপাড়া এলাকায় যান।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ওসিসহ অন্য পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে আসামি হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরাটি উদ্ধার করা হয়। অথচ ওই সময়ে ওসির আইসোলেশনে থাকার কথা। এ অভিযানে গ্রেপ্তার আসামি ছাড়া একাধিক পুলিশ সদস্য ওসির সংস্পর্শে আসেন। বিষয়টি সন্ধ্যা নাগাদ জানাজানি হয়। এরপর জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে ওসিকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে জেলা শহরের শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামের কোভিড-১৯ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সূত্র জানায়, আজ ওসি আবদুস সামাদের স্থলে নতুন ওসি হিসেবে মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। এদিকে আইসোলেশনের শর্ত ভঙ্গ করে ওসি থানার ভেতরে ও বাইরে ঘোরাফেরা করায় থানায় অনেকেই করোনা–আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে ওসিকে আবদুস সামাদকে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে পুলিশ সুপার প্রথম আলোকে বলেন, ওসি করোনায় আক্রান্ত হয়েও আইসোলেশনে না থেকে বাইরে গিয়ে আসামি নিয়ে অভিযানে গিয়ে খুবই অন্যায় করেছেন এবং অন্যদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন। তাই তাঁকে প্রত্যাহার করে কোভিড হাসপাতালে আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে নোয়াখালী জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক মো. মনির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সোনাইমুড়ী থানা থেকে হত্যা মামলার আসামি মীর হোসেনকে আজ আদালত থেকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কারা ফটকে আসার পর তাঁর শরীরের তাপমাত্রা মেপে স্বাভাবিক পাওয়া গেছে। এরপরও সতর্কতা এড়াতে তাঁকে আপাতত একটি আলাদা কক্ষে রাখা হয়েছে। ১৪ দিন তিনি সেখানে থাকবেন।

জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হওয়ায় ৯ জুন সোনাইমুড়ী থানার ওসি আবদুস সামাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে নমুনা দেন পরীক্ষার জন্য। ১৫ জুন তিনি করোনায় আক্রান্ত বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিশ্চিত করা হয়। ওই দিন থেকেই তাঁর থানার আবাসিক ভবনের নিজ কক্ষে আইসোলেশনে থাকার কথা।