আগুনে পোড়ার ১০ দিন পর মৃত্যুর কাছে হেরে গেলেন মিনারা

হত্যা
প্রতীকী ছবি

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ১০ দিন পর মিনারা আক্তার (২১) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

মিনারা আক্তার বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের রফিক উদ্দিনের মেয়ে। স্বামী শিপন আহমদ ঘুমন্ত মিনারা আক্তারের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ পরিবারের।

মিনারার ছোট ভাই রাজু আহমদ আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাসপাতালের চিকিৎসকেরা অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাঁকে বাঁচানো যায়নি।’

বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার মিনারা আক্তারের মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এই ঘটনায় মিনারা আক্তারের স্বামী ও শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা কারাগারে আছেন।

পুলিশ, পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের রফিক উদ্দিনের মেয়ে মিনারা আক্তার রহিমার সঙ্গে প্রায় তিন বছর আগে একই ইউনিয়নের আরেঙ্গাবাদ গ্রামের মুকুল হকের ছেলে শিপন আহমদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্বামীর বাড়িতে মিনারাকে নির্যাতন করার অভিযোগ আছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কয়েকবার বিরোধ মীমাংসা করে দিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের মধ্যে বিরোধ লেগেই ছিল। এদিকে স্বামীর বাড়িতে নির্যাতন সইতে না পেরে প্রায় সাত মাস আগে একমাত্র সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি হরিপুর গ্রামে চলে আসেন মিনারা আক্তার।

সন্তানকে দেখার কথা বলে প্রায়ই শ্বশুরবাড়িতে আসতেন শিপন আহমদ। ৩ জুলাই শিপন আহমদ শ্বশুরবাড়িতে আসেন। এরপর রাতে থেকে যান। পরদিন ৪ জুলাই ভোরে ঘুমন্ত মিনারা আক্তারের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যান। পরিবারের লোকজন তাঁকে প্রথমে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। কিন্তু অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে তাঁকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।

এদিকে এই ঘটনায় মিনারার ভাই রাজু আহমদ মামলা করলে পুলিশ শিপন আহমদ ও শাশুড়ি আনুরি বেগমকে গ্রেপ্তার করে। তাঁরা কারাগারে আছেন।