আত্মহত্যা নয়, হত্যার শিকার হন সেই চীনা প্রকৌশলী

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার একটি কারখানা থেকে লিয়াং হো রোং (৪৫) নামে চীনা প্রকৌশলীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয়েছিল গত ১৩ মার্চ। কোন অভিযোগ না থাকায় ওই ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। সম্প্রতি লিয়াং হোর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়ে পুলিশ জানিয়েছে, লিয়াং হোকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছিল। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় নতুন করে হত্যা মামলা করেছে পুলিশ।

রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জসিম উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, লিয়াং হো রোং তারাব পৌরসভার মাসাবো এলাকায় জু-জো ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি ব্যাটারি তৈরির কারখানায় প্রকৌশলী ছিলেন। ১৩ মার্চ কারখানার ভেতরের একটি কক্ষ থেকে তাঁর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক অবস্থায় কোনো অভিযোগ না থাকায় এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। গত বৃহস্পতিবার পুলিশের হাতে আসা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায় ওই প্রকৌশলীকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মোবারক হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেছেন।

রূপগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চার বছর আগে মাসাব এলাকার লিথুন ফেব্রিক্স নামের একটি বন্ধ কারখানা ভাড়া নিয়ে জু-জো ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি ব্যাটারি প্রস্তুতকারক কারখানা স্থাপন করেন এক চীনা ব্যবসায়ী। কোম্পানিটি মূলত ইজিবাইকের ব্যাটারি তৈরির কাজ করে। লিয়াং হো রোং শুরু থেকেই সেই কারখানায় ইলেকট্রিক প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করছিলেন। হত্যার আগে নিজের দেশ থেকে ছুটি কাটিয়ে এসে গত ১০ মার্চ কাজে যোগ দেন লিয়াং হো রোং। ১৩ মার্চ দুপুরে কারখানার ভেতরে থাকা তাঁর শয়নকক্ষে দুপুরের খাবার দিতে গেলে কক্ষটি ভেতর থেকে বন্ধ পাওয়া যায়। পরে কারখানার কর্মকর্তাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ কক্ষের দরজা ভেঙে তাঁর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রূপগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মাহাবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, লাশ উদ্ধারের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে লাশের ময়নাতদন্ত হয়। সেখান থেকেই পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাশটি চীনে থাকা তাঁর পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। মামলার রহস্য উদ্‌ঘাটন ও হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।