আত্রাই নদের পানি বিপৎসীমার ওপরে, ছোট যমুনায় ছুঁই ছুঁই

আত্রাই নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বাধের ভাঙনস্থান দিয়ে পানি ঢুকেছে। নওগাঁর মান্দার জোকাগাট এলাকায়।
ফাইল ছবি

নওগাঁয় আত্রাই নদে পানির উচ্চতা বিপৎসীমার ওপরে উঠে গেছে। নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার শিমুলতলী পয়েন্টে আত্রাই নদের পানির উচ্চতা বিপৎসীমা ২১ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার অতিক্রম করেছে। আজ শনিবার সকাল ৯টায় শিমুলতলী পয়েন্টে পানির উচ্চতা পরিমাপ করা হয় ২১ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার। ফলে বাঁধের ভাঙনস্থান দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।

নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, শিমুলতলী পয়েন্টে আত্রাই নদের পানির বিপৎসীমা ২১ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার। সর্বশেষ রিডিংয়ে (পানির উচ্চতা পরিমাপ) আজ সকাল ৯টায় ওই পয়েন্টে নদের পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় পানির উচ্চতা বেড়েছে ৪৫ সেন্টিমিটার। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী দুই-তিন দিন পানি আরও কিছুটা বাড়বে।

এদিকে ক্রমেই পানি বাড়তে থাকায় ছোট যমুনা নদীর পানি ফুলে উঠে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। আজ সকাল ৯টায় নওগাঁ শহরের লিটনব্রিজ পয়েন্টে ছোট যমুনা নদীর পানির উচ্চতা পরিমাপ করা হয় ১৫ দশমিক ১০ সেন্টিমিটার। লিটনব্রিজ পয়েন্টে ছোট যমুনা নদীর পানির উচ্চতা বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

নদ–নদীর পানি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় নওগাঁয় দ্বিতীয় দফা বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে জেলার আত্রাই ও মান্দা উপজেলার পাঁচটি স্থানে আত্রাই নদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যায়। এতে ওই ২ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়। বাঁধের ওই সব ভাঙনস্থান মেরামত না করায় লোকালয়ে আবারও আত্রাই নদের পানি ঢুকতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে মান্দার বিষ্ণুপুর ও নুরুল্যাবাদ ইউনিয়ন এবং আত্রাই উপজেলার হাটকালুপাড়া ও বিশা ইউনিয়নের বিস্তৃর্ণ ফসলের মাঠ ডুবে গেছে।

মান্দা উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত জুলাই মাসের বাঁধভাঙা পানিতে প্রায় ২০ দিন ধরে বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের প্রায় সব কটি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়েছিল। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে ফসলি মাঠগুলোতে কৃষকেরা আমনের চারা রোপন করেছিলেন। নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় গত বুধবার থেকে জোকাহাট, চকরামপুর ও কয়লাবাড়ি এলাকায় বাঁধের ভাঙনস্থান দিয়ে আবারও পানি ঢুকতে শুরু করেছে। সদ্য লাগানো আমন চারা ডুবে যাওয়ায় আবারও ক্ষতির সম্মুখীন হলেন কৃষকেরা।