আদালত প্রাঙ্গণে নষ্ট হচ্ছে মামলার আলামত

বিভিন্ন সময় মামলার আলামত হিসেবে জব্দ করা মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন কিছু। বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণেদিনার মাহমুদ

নারায়ণগঞ্জে আদালত প্রাঙ্গণে রাখা হয়েছে বিভিন্ন মামলার আলামত। আলামতের মধ্যে আছে মাদকদ্রব্য, মোটরসাইকেল, ভ্যান, তার, রিকশা, গাড়িসহ বিভিন্ন কিছু। বছরের পর বছর এসব আলামত খোলা আকাশের নিচে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পুলিশ বলছে, এখানে ৩০ হাজারের বেশি মামলার আলামত আছে। তবে মাদক মামলার আলামতের সংখ্যাই বেশি। আলামত রাখার জন্য জায়গা বাড়ানো প্রয়োজন।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, আদালত প্রাঙ্গণে শতাধিক মোটরসাইকেল, গাড়ি, রিকশা, ভ্যানগাড়ি, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, বৈদ্যুতিক তার, ব্যাটারিসহ বিভিন্ন মামলার আলামত ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে। খোলা আকাশের নিচে এসব আলামত পড়ে আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা সদর, ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, বন্দর, রূপগঞ্জ ও আড়াইহাজার মডেল থানায় মাদক, চুরি, ডাকাতি, হত্যাসহ বিভিন্ন মামলার বিপুলসংখ্যক আলামত জমে আছে। আগে থেকেই এখানে আলামত পড়ে আছে। সম্প্রতি ওই থানাগুলো থেকে মামলার আলামত আদালত প্রাঙ্গণে নিয়ে আসায় তা আরও বেড়েছে। খোলা আকাশের নিচে এসব থাকায় রোদ, বৃষ্টি ও ঝড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

জেলা আইনজীবী সমিতির জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আওলাদ হোসেন বলেন, আলামত একটি মামলার গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। এসব যাতে নষ্ট ও চুরি হয়ে না যায়, সে জন্য যথাযথভাবে সংরক্ষণ করে রাখতে হয়। মামলা তদন্তাধীন পর্যায়ে আলামতের বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে হবে। মামলার রায়ের সঙ্গে আলামতের বিষয়ে আদালতের আদেশ দেওয়া প্রয়োজন। প্রয়োজনে এসব মাল নিলামে বিক্রি করে ওই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা যেতে পারে।

এ বিষয়ে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) ওয়াজেদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, অধিকাংশ মামলা যেগুলো নিষ্পত্তি হয়েছে। সেগুলোর আলামত বাইরে রয়েছে। এসব নিলামে বিক্রি করে সরকারি কোষাগারে টাকা জমা করা হয়। তবে অস্ত্র, স্বর্ণ, টাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ আলামত যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়।

খোলা আকাশের নিচে বিভিন্ন মামলার এসব আলামত থাকায় তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণে
দিনার মাহমুদ

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, সম্প্রতি জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে সব থানার মামলার আলামত থানা থেকে আদালতের মালখানায় নিয়ে আসা হয়েছে। বিচারাধীন মামলাগুলো যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি করা যায়, সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, লাখ লাখ মামলার আলামত। ১০ শতাংশ আলামত রাখা সম্ভব হলেও ৯০ শতাংশ মামলার আলামত রাখার জায়গা নেই। সেগুলো আদালত প্রাঙ্গণে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রাখা হচ্ছে। আলামত রাখার জন্য জায়গা বাড়ানো প্রয়োজন বলে জানান তিনি।