আবার অনশনে ইমামুল

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনশনে থাকা ইমামুল (শুয়ে থাকা দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে ডানে) দুদিন চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে ফিরে এসে আবার অনশনে বসেছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ, ২৫ জানুয়ারি। ছবি: প্রথম আলো

হাসপাতাল থেকে সরাসরি অনশনস্থলে গিয়ে আবার অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) ইমামুল ইসলাম। আজ সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে অনশন শুরু করেন তিনি। তবে অন্য শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মোবারক হোসেন এখনো খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর স্থলে অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন বাংলা ডিসিপ্লিনের মোজাহিদুল ইসলাম।

ইমামুল ইসলাম জানান, রোববার তাঁরা তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে উপাচার্যের কাছে লিখিত আবেদন করেছিলেন, কিন্তু তার কোনো সাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক শরীফ হাসান বলেন, চিঠিটি উপাচার্যের কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে সেখান থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

প্রগতিশীল ছাত্র জোটের সংবাদ সম্মেলন
শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও তিন শিক্ষককে চাকরিচ্যুতির ঘটনায় তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলন করেছে প্রগতিশীল ছাত্র জোট। আজ দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলন থেকে ওই ঘটনার প্রতিবাদে ২৭ জানুয়ারি ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে ও ২৮ জানুয়ারি প্রতি জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দেন জোটের নেতারা।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। ওই দাবিগুলো হলো আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ এবং শিক্ষকদের বরখাস্ত ও অপসারণের আদেশ প্রত্যাহার করা, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবি অবিলম্বে বাস্তবায়ন করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ ধ্বংস ও ছাত্র রাজনীতি বন্ধের চক্রান্ত বন্ধ করা।

লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রগতিশীল ছাত্র জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী আল কাদেরী জয়। তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের নামে যে অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত কার্যকর রয়েছে, সেই অগণতান্ত্রিক চর্চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে স্বৈরাচারী রূপ দিতে সাহায্য করেছে। এতে কোনো ভিন্ন মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া দূরের কথা, শিক্ষার্থীদের জীবনের মূল্যও দিতে তাঁরা ভুলে গেছেন।

আল কাদেরী জয় বলেন, ২০২০ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবর অস্বাভাবিক বেতন বৃদ্ধির হার কমানো, আবাসনসংকট নিরসন, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতি, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে অবকাঠামো নির্মাণ এবং শিক্ষার্থীবিষয়ক সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তকরণ ও অবহিতকরণ—এই ৫ দফা দাবি জানান।

ওই দাবি কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর আশানুরূপ কোনো ফল না পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেন। এতে দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও তিন শিক্ষককে চাকরিচ্যুতি করার ঘটনা বিরল। তাঁরা অবিলম্বে দুই ছাত্র ও তিন শিক্ষকের শাস্তি প্রত্যাহারের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি সঞ্জীব মণ্ডল প্রমুখ।