আবারও পেছাল গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচন

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচন আবার পেছাল। করোনার কারণে স্থগিত হওয়া উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ আগামী ১০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচন কমিশন থেকে গত রোববার বিকেলে এ–সংক্রান্ত চিঠি আসার পরদিন ভোরে অন্যতম প্রার্থী নুরুল ইসলাম মণ্ডল মারা যান। ফলে ১০ অক্টোবর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না।

একটি পৌরসভা ও চারটি ইউনিয়ন মিলে গঠিত গোয়ালন্দ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৯১ হাজার ৫৪৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪৬ হাজার ৪৪ জন এবং নারী ভোটার ৪৫ হাজার ৫০০ জন।

গোয়ালন্দ নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় জানায়, গত বছরের ২৪ মার্চ পঞ্চম উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় ভোট গ্রহণ হলেও চেয়ারম্যান পদে এ বি এম নুরুল ইসলাম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দ্বিতীয়বারের মতো উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এর সাত মাস পর নুরুল ইসলাম গুরুতর অসুস্থ হন। তাঁকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে (স্কয়ার) ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর তিনি মারা যান।

এরপর স্থানীয় সরকার বিভাগ উপজেলা চেয়ারম্যানের পদটি শূন্য ঘোষণা করে। ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে ভাইস চেয়ারম্যান ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান চৌধুরী দায়িত্ব গ্রহণ করেন। চলতি বছর ২৯ মার্চ এখানে উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণের তারিখ ঘোষণা করা হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও মোস্তফা মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোস্তফা মুন্সী (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে (আ.লীগ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত) উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মণ্ডল (ঘোড়া) ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহাবুব আলমের (ধানের শীষ) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা।

এর মধ্যে সারা দেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় নির্বাচন কমিশন ভোট গ্রহণের চার দিন আগে গত ২৫ মার্চ উপনির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে।

প্রায় ছয় মাস পর রোববার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত পত্রে আগামী ১০ অক্টোবর গোয়ালন্দ ও ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। রোববার সন্ধ্যায় প্রার্থীরা এমন বার্তা পাওয়ার পর পুরোদমে প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। ওই দিন সন্ধ্যার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল ইসলাম মণ্ডল গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাতেই জরুরিভাবে ঢাকার সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল সোমবার ভোর পাঁচটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, মোট তিন প্রার্থীর মধ্যে গতকাল ভোরে নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী নুরুল ইসলাম মণ্ডল মারা যাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় ঘোষিত তারিখ আগামী ১০ অক্টোবর উপনির্বাচন হচ্ছে না। নতুন করে তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।