আলমডাঙ্গায় আ.লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কার্যালয়ে পাল্টাপাল্টি হামলা, ১৬৯ জনকে আসামি করে মামলা

মোবাইল ফোন প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সবেদ আলীর নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাঙচুরের চিত্র
ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর কয়েকটি কার্যালয়ে পাল্টাপাল্টি হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর তিন কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁরা হলেন বিপ্লব, রশিদ ও শাহীন। আহত লোকজনকে প্রথমে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ও পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাসান কাদির গণির পক্ষে দলীয় কর্মী আ স ম আলাউদ্দিন বাদী হয়ে মামলা করেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী সবেদ আলীর ৪৯ জন কর্মীর নাম উল্লেখ করে ও ১২০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিসহ মোট ১৬৯ জনকে আসামি করে মামলাটি করা হয়েছে। মামলার পর গোবিন্দপুর এলাকা থেকে রবিউল ইসলাম (৫২) ও আলতাফ হোসেন (৩৫) নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবির বলেন, নৌকা প্রতীকের সমর্থনে একটি মোটরসাইকেল মহড়া থেকে মোবাইল ফোন প্রতীকের কার্যালয়ে প্রথমে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে ৫০-৬০ জন সংগঠিত হয়ে ধারালো অস্ত্র নিয়ে নৌকার কার্যালয়ে হামলা চালায়। এতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর তিন কর্মী আহত হয়েছেন।

জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা তারেক আহমেদ বলেন, বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নোটিশ করা হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা আলমডাঙ্গা শহরে মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়ায় নামেন। তাঁরা মহড়া দিতে দিতে কলেজপাড়া ও আনন্দধামে মোবাইল ফোন প্রতীকের কার্যালয় ভাঙচুর এবং কর্মী নজরুল ইসলামের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে মোবাইল ফোন প্রতীকের কর্মী-সমর্থকেরা সংগঠিত হয়ে আনন্দধাম, চাতাল মোড়, কলেজপাড়া ও গোবিন্দপুর এলাকায় নৌকা প্রতীকের চারটি নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করেন এবং কয়েকটি বাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় নৌকা প্রতীকের তিনজন কর্মী আহত হন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাদী মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন বলেন, আহত তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ক্ষতের ধরন দেখে মনে হচ্ছে নিক্ষিপ্ত ইট ও লাঠিসোঁটার আঘাতে তাঁরা আহত হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হাসান কাদির বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সবেদ আলীর লোকজন নিশ্চিত পরাজয় জেনে নিজেরাই নিজেদের কার্যালয় ভাঙচুর করেন। পরে তাঁরা নৌকার কার্যালয়ে এসে ভাঙচুর করেন এবং কর্মীদের মেরে জখম করেন।

এ বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোবাইল ফোন প্রতীকের সবেদ আলী বলেন, ‘১ ফেব্রুয়ারি রাতে নৌকার লোকজন আমার আনন্দধাম এলাকায় নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করে। ওই ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও গত ১১ দিনে পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই একই প্রতীকের লোকজন আবারও দুটি কার্যালয়ে হামলা ও একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে। আমার কর্মীরা ভোটারদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে।’