আ.লীগ নেতাকে আটক, বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা

বরিশাল বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় এক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করার পর নগরীর কাউনিয়া থানা ঘেরাও করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। পরে দাবির মুখে তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় পুলিশ এবং পুলিশে সোপর্দকারী বরিশাল বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি ও ফরচুন শুজ কোম্পানির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা রুজু করা হয়।

ওই ওয়ার্ড নেতার নাম সোহাগ হাওলাদার। তিনি বরিশাল নগরীর ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। ফরচুন শুজ কোম্পানির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান তাঁর কারখানার এক নারী শ্রমিককে উত্ত্যক্তের অভিযোগে তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করেন বলে দাবি করেছেন। যদিও সোহাগ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দাবি, সোহাগকে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে থানায় সোপর্দ করা হয়।

বুধবার দুপুরের ঘটনা এটি। আর থানা ঘেরাওয়ের ঘটনা ঘটে রাত ৮টার দিকে এবং সোহাগ মুক্ত হয়ে মামলা করেন রাত ১০টার দিকে।

গতকাল বুধবার দুপুরের ঘটনা এটি। আর থানা ঘেরাওয়ের ঘটনা ঘটে রাত ৮টার দিকে এবং সোহাগ মুক্ত হয়ে মামলা করেন রাত ১০টার দিকে। পুলিশ জানায়, মামলায় মিজানুর রহমান ছাড়াও তাঁর তিন ভাই ও অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে পথ রোধ করে অপহরণের অভিযোগ আনা হয়েছে।

আমার কারখানার এক নারী শ্রমিককে বিসিক এলাকার মধ্যে উত্ত্যক্ত করছিলেন সোহাগ হাওলাদার। গতকাল দুপুরে এ ঘটনা দেখে সোহাগকে আটক করে কাউনিয়া থানা-পুলিশে সোপর্দ করি।
মিজানুর রহমান, বরিশাল বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি ও ফরচুন শুজ কোম্পানির চেয়ারম্যান

জানতে চাইলে মিজানুর রহমান বলেন, তাঁর কারখানার এক নারী শ্রমিককে বিসিক এলাকার মধ্যে উত্ত্যক্ত করছিলেন সোহাগ হাওলাদার। গতকাল দুপুরে তিনি গাড়িতে কারখানার দিকে যাওয়ার সময় এ ঘটনা দেখে সোহাগকে আটক করে কাউনিয়া থানা-পুলিশে সোপর্দ করেন। তাঁকে মারধর কিংবা জোর করে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে সোহাগ হাওলাদার বলেন, তিনি ফরচুন শুজ কোম্পানির কাছে পাওনা টাকা আনতে গেলে তাঁকে আটকে রেখে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে থানায় সোপর্দ করা হয়।

আমি ফরচুন শুজ কোম্পানির কাছে পাওনা টাকা আনতে গেলে আমাকে আটকে রেখে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে থানায় সোপর্দ করা হয়।
সোহাগ হাওলাদার, বরিশাল নগরীর ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক

বিসিক এলাকার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, সোহাগ হাওলাদারকে পুলিশে সোপর্দ করার পর গতকাল সন্ধ্যা থেকে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে মাঠে নামেন। তাঁরা রাত আটটার দিকে কাউনিয়া থানা ঘেরাও করে সোহাগের মুক্তি দাবি করেন এবং মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলার এজাহার নথিভুক্ত করার দাবি জানান। পরে এই দাবিতে তাঁরা নথুল্লাবাদ ও রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডেও অবরোধ করেন। পরে পুলিশ আটক সোহাগকে ছেড়ে দেয় এবং সোহাগের করা মামলাটি নথিভুক্ত করলে রাত ১০টার দিকে অবরোধ তুলে নেন নেতা-কর্মীরা।

কাউনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সগির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।