আ.লীগ–যুবলীগ নেতারা বালু তুলছেন অবৈধভাবে

  • নিমগাছি ইউনিয়নের জয়শিং ঘাট এলাকা থেকে বালু তুলছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক।

  • যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজাউদ্দৌলাসহ একাধিক নেতা-কর্মীও জড়িত আছেন।

বগুড়ার ধুনট উপজেলার নিমগাছি ইউনিয়নের জয়শিং ঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক যন্ত্রচালিত শ্যালো মেশিন দিয়ে বাঙ্গালী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার অভিযোগ উঠেছে। এই বালু তোলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত উপজেলা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের কয়েকজন নেতা। এ কারণে অভিযোগ দিয়ে কোনো প্রতিকার মিলছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা।

ইউনিয়নের জয়শিং ঘাট এলাকা থেকে বালু তুলছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এস এম মাসুদ রানা। উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বালু তুলছেন, এমনটা দাবি করে মাসুদ জানান, বালু তোলায় জড়িত আছেন উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজাউদ্দৌলাসহ একাধিক নেতা-কর্মী।

তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই ঘাট এলাকায় বালু তোলার অনুমতি দেওয়া হয়নি কাউকে। জয়শিং ঘাট এলাকার স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘাটের পাশে ধামাচামা গ্রাম। এর মাঝামাঝি জায়গায় বাঙ্গালী নদী থেকে প্রায় ১৫ দিন ধরে শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু তুলে বিক্রি করেন খলিলুর রহমান নামের একজন। এর আগে তিনি জয়শিং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে নদী থেকে বালু তুলে বিক্রি করেন।

তবে খলিলুর রহমানের দাবি, তিনি সরকারি চাকরি করেন, শ্যালো মেশিন তাঁর, তবে তিনি তা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এস এম মাসুদ রানার কাছে ভাড়া দিয়েছেন। মাসুদই রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বালু তুলছেন।

যোগাযোগ করা হলে মাসুদ রানাও খলিলুরের কাছে থেকে শ্যালো মেশিন ভাড়া নেওয়ার কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, মাত্র কদিন ধরে তিনি নদী থেকে বালু তুলছেন। এ জন্য উপজেলা প্রশাসনের অনুমতিও নিয়েছেন। আর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজাউদ্দৌলার দাবি, তিনি সরকারি কাজের জন্য বালু সরবরাহ করছেন। সরকারি অনুমতির বাইরে তিনি বালু তোলেননি।

গত বুধবার সকালে সরেজমিন গেলে জয়শিং গ্রামের ১০ থেকে ১২ ব্যক্তি জানান, ধামাচামা গ্রামের উত্তর পাশে বাঙ্গালী নদী থেকে বালু তুলছেন জোড়গাছা গ্রামের রাজু আহম্মেদ। বমগাড়া খালের দুই পাশ থেকে বালু তুলছেন কালাইহাটা গ্রামের ইউসুব আলী ও হেউটনগর গ্রামের মাসুদ।

এদিকে নদীর বিলচাপড়ী সেতুর উত্তর পাশ থেকে খননযন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন এলাঙ্গী ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য রবিউল ইসলাম। একই স্থান থেকে বালু তুলছেন বিলচাপড়ি গ্রামের আবদুল আলিম ও রামনগর গ্রামের নজরুল ইসলাম।

সেতু, সড়ক ও কলেজের অবকাঠামো ভাঙনের আশঙ্কায় বিলচাপড়ী আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম গত ২৩ জুন ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু এ বিষয়ে এখনো পদক্ষেপ নেয়নি উপজেলা প্রশাসন।

ধুনটের ইউএনও সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, বাঙ্গালী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার অভিযোগে কয়েক দফায় অভিযান চালানো হয়েছে। বালু উত্তোলনকারীরা খবর পেয়ে তাঁদের মেশিনগুলো আগেই সরিয়ে ফেলেন। এসব স্থানে আবার অভিযান চালানো হবে।