আ.লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ, বিএনপিও মাঠে

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় সীতাকুণ্ড পৌরসভাসহ দেশের ২৫ পৌরসভায় নির্বাচনের তফসিল একসঙ্গে ঘোষণা নির্বাচন কমিশন।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান, তফসিল অনুযায়ী সীতাকুণ্ড পৌরসভার নির্বাচন হবে ২৮ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ৩ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১০ ডিসেম্বর।

১৯৯৮ সালে ১ এপ্রিল ২৮ বর্গমাইল আয়তনের নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে সীতাকুণ্ড পৌরসভা গঠিত হয়। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, হালনাগাদ ভোটার তালিকায় পৌরসভায় ভোটার রয়েছেন মোট ভোটার ৩৪ হাজার ৮১৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৭ হাজার ৮২৭ জন। নির্বাচন হবে মোট ১৭টি কেন্দ্রে। ২০১৫ সালের  ৩০ ডিসেম্বর সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, এবার সীতাকুণ্ড পৌরসভায় প্রথমবারের মতো সব কটি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। এ জন্য নির্বাচনের প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

এদিকে পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে সীতাকুণ্ডে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা নড়েচড়ে বসেছেন। তবে বিএনপির তুলনায় আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ বেশি।

উপজেলা ও পৌরসভার আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রগুলো জানায়, ইতিমধ্যে মেয়র প্রার্থী হওয়ার জন্য অন্তত ১০ জন নেতা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম বর্তমান মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদিউল আলম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গোলাম রব্বানী, পৌরসভার কাউন্সিলর মাইমুন উদ্দিন (মামুন), সফিউল আলম চৌধুরী (মুরাদ) ও জুলফিকার আলী (শামিম), পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ, পৌর যুবলীগের সভাপতি শাহ কামাল চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোহাম্মদ ইউসুফ ও জাহেদ চৌধুরী ফারুক। এ ছাড়া গতবারের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর সিরাজদ্দৌলা (সুট্টু) দলীয় মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে।

এ সম্পর্কে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল বাকের ভুঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে যাঁরা দৌড়ঝাঁপ করছেন, তাঁরা সবাই কমবেশি যোগ্য। তবে মনোনয়নের প্রক্রিয়া এবার কিছুটা ভিন্ন। প্রার্থী মনোনয়ন করবেন পৌরসভার নেতা-কর্মীরা। প্রথমে পৌরসভা কমিটি একটি বর্ধিত সভা করে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা তাদের (উপজেলা কমিটি) দেবে। তারা ওই তালিকা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠাবে। এরপর দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন চূড়ান্ত করবেন।

এদিকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যেও নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ দেখা গেছে। তাঁদেরও একাধিক প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন চান। উপজেলা বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা যায়, এবারও দলের প্রার্থী হতে চান গত পৌর নির্বাচনে ধানের শীষ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী আবুল মনছুর। এ ছাড়া পৌর বিএনপির সভাপতি ইউসুফ নিজামী, সাবেক ছাত্রনেতা বখতিয়ার উদ্দিন, মোহাম্মদ আলমগীরও (ইমরান) দলীয় মনোনয়ন পেতে আগ্রহী।

বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আবুল মনছুর বলেন, গতবার নির্বাচনের নামে তামাশা হয়েছে। এবার যদি তামাশা করার চেষ্টা হয়, তাহলে জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।

পৌর বিএনপির সভাপতি ইউছুপ নিজামী বলেন, তাঁদের দলে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী থাকলেও দলীয় কোন্দল নেই। সবাই দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন।

উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব জহুরুল আলম জহুর প্রথম আলোকে বলেন, সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রে পাঠানো হবে। তারপর কেন্দ্র থেকে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।