আশুগঞ্জে হামলায় চেয়ারম্যানের ভাই নিহত, এলাকায় উত্তেজনা

নিহত জামাল মুন্সি
ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে পূর্ববিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সির ভাই জামাল মুন্সি (৫০) নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত একটার দিকে উপজেলার চরচারতলা এলাকার মুন্সিবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ সাতজনকে আটক করেছে।

নিহত জামাল মুন্সি চরচারতলার মুন্সিবাড়ির ফজলুল হক মুন্সির ছেলে। তিনি আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হানিফ মুন্সির ভাই। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা চলছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চরচারতলা গ্রামের লতিবাড়ির লোকজনের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মুন্সিবাড়ির বিরোধ চলছিল। গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার চরচারতলা ঈদগাহ মাঠের পাশে আবুল মিয়ার দোকানে হানিফ মুন্সির ভাই মুমিন মুন্সি ও একই এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সাদ্দাম মিয়ার মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেয়। এ ঘটনা জানতে পেরে উপজেলা চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সি রাতেই সেখানে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেন। পরে উভয় পক্ষ বাড়িতে চলে যায়।

এ ঘটনার জের ধরে একই এলাকার লতিবাড়ির আবু শহীদ, সেলিম, আবদু, জিয়া খন্দকার, শফিক, দিলুর নেতৃত্বে তাঁদের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাত একটার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের মুন্সিবাড়িতে হামলা চালায়। সে সময় হানিফ মুন্সির ছোট ভাই জামাল মুন্সিসহ আরও কয়েকজন এতে বাধা দেন। প্রতিপক্ষের হামলায় জামাল গুরুতর আহত হন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত সাত থেকে আটজন আহত হন। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় মেডিল্যাব হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জামালকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ। আহত ব্যক্তিরা স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির বড় ভাই আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সি বলেন, ‘কোনো কারণ ছাড়াই আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে আবু শহীদ, সেলিম, আবদু, জিয়া খন্দকার, শফিক, দিলুর নেতৃত্বে তাদের লোকজন আমার বাড়িতে হামলা চালায়। আমার ছোট ভাই জামাল মুন্সি বাধা দিতে বের হন। হামলাকারীদের হাতে আমার ভাই মারা যান। তারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে।’ তিনি এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানান।

আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ বলেন, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিহত জামালের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।