আশুলিয়ায় কিশোরকে পিটিয়ে হত্যায় যুবলীগের নেতাসহ গ্রেপ্তার ৪

প্রতীকী ছবি

ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় মুক্তিপণ না পেয়ে কিশোর সবুজ মিয়াকে হত্যার ঘটনায় যুবলীগের এক নেতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে গত শুক্রবার রাতে তাঁদের ধরা হয়। আজ শনিবার তাঁদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার হওয়া চারজন হলেন আশুলিয়া থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও কন্ডা এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন (৩০), পবনারটেক এলাকার আদিল (২২), শ্রীপুর এলাকার কামরুল ইসলাম (২১) ও জিরানী বাজার এলাকার রুবেল ইসলাম (২১)।

নিহত সবুজ (১৬) লালমনিরহাট সদর উপজেলার কাজী কলোনি গ্রামের মিছির আলীর ছেলে। বাবা-মায়ের সঙ্গে রাগ করে বন্ধু জাহিদুল ইসলামকে (১৪) নিয়ে গত সোমবার সে আশুলিয়ার পাবনারটেক এলাকায় বোনের বাসায় যাচ্ছিল।

নিহত সবুজ (১৬) লালমনিরহাট সদর উপজেলার কাজী কলোনি গ্রামের মিছির আলীর ছেলে। বাবা-মায়ের সঙ্গে রাগ করে বন্ধু জাহিদুল ইসলামকে (১৪) নিয়ে গত সোমবার সে আশুলিয়ার পাবনারটেক এলাকায় বোনের বাসায় যাচ্ছিল। পথে তারা অপহরণের শিকার হয়।

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জিয়াউল ইসলাম বলেন, সবুজ ও জাহিদুল লালমনিরহাট থেকে বাসে করে সোমবার রাত দেড়টার দিকে ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার (ডিইপিজেড) বাসস্ট্যান্ডে নামে। এরপর তারা হেঁটে শ্রীপুরের দিকে যাচ্ছিল। তাদের ধারণা ছিল, ওই দিকে পবনারটেক। পথে কামরুলের সঙ্গে তাদের দেখা হয়। কামরুল তাদের পরিচয় ও কোথায় যাচ্ছে—জানতে চান। সব শুনে কামরুল তাদের সমবেদনা দেখিয়ে রাতটুকু হোটেলে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এ কথা বলে কামরুল তাদের শ্রীপুর মোজার মিল এলাকায় নির্জন ডোবার পাড়ে নিয়ে যান।

জিয়াউল আরও বলেন, কামরুল মুঠোফোনে কল করে আবুল হোসেনসহ অন্তত ১৩ জনকে ডোবার পারে ডেকে নেন। তাঁরা ২০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চেয়ে সবুজের মায়ের কাছে কল করেন। বিকাশের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে টাকা না পাঠানোর কারণে তাঁরা সবুজ ও জাহিদুলকে মারধর করতে থাকেন। একপর্যায়ে মঙ্গলবার সকালে সবুজ মারা যায়। জাহিদুল অচেতন হয়ে পড়ে। দুর্বৃত্তরা মৃত ভেবে দুজনকে ডোবার পারে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।

আবুল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে কিশোর গ্যাং পরিচালনা করে আসছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে অনেক অপকর্মের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
কামরুজ্জামান, ওসি, আশুলিয়া থানা

আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় সবুজের বোন বিউটি আক্তার গত বুধবার অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন। প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে গত শুক্রবার রাতে আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থান থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ তাঁদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ওসি আরও বলেন, আবুল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে কিশোর গ্যাং পরিচালনা করে আসছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে অনেক অপকর্মের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।