ইউএনও এবং পিআইওর পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

  • পিআইও বলেন, ঘর নির্মাণের কোনো কাজে তাঁকে রাখা হয়নি। তিনি এর দায়ভারও নেবেন না।

  • ইউএনও বলেন, পিআইওর চিঠি দেওয়াটা ধৃষ্টতার শামিল। এটা সরকারি শিষ্টাচার বিবর্জিত।

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রায়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে যার জমি আছে ঘর নেই, তাঁর জমিতে গৃহ নির্মাণ ও প্রাক্কলন বাস্তবায়ন করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) চিঠি দিয়েছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও)। এদিকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে এ ধরনের চিঠি দেওয়া অবমাননাকর আচরণের শামিল উল্লেখ করে পিআইওকে শোকজ করেছেন ইউএনও।

এ অবস্থায় দুই কর্মকর্তাই চিঠি ও শোকজ নোটিশের অনুলিপি জেলা প্রশাসনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন। ঘর নির্মাণ নিয়ে চিঠি চালাচালির কথা শুনে স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, সরকারি কর্মকর্তারা এভাবে চিঠি চালাচালি করছেন মানে কোথাও কোনো অনিয়ম হচ্ছে। এ অবস্থায় চলমান প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে কড়া নজরদারি করার দাবি জানান তাঁরা।

গতকাল বুধবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে পিআইও মো. আবদুল আলীম বলেন, তিনি ঘর নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যসচিব ও কারিগরি কর্মকর্তা। সম্প্রতি তিনি তিনটি ঘর পরিদর্শন করেছেন। যে তিনটি ঘরের নির্মাণকাজ করা হয়েছে, সেগুলো নকশা ও প্রাক্কলন মোতাবেক নির্মাণ করা হয়নি। ঘর তিনটি নির্মিত হয়েছে নান্দাইল উপজেলার মুশুলি ইউনিয়নের একটি ও সিংরইল ইউনিয়নে দুটি।

মো. আবদুল আলীম আরও বলেন, ঘর নির্মাণকাজের যাবতীয় উপকরণ ইউএনও মো. এরশাদ উদ্দিন একাই কিনেছেন। কারিগরি কর্মকর্তা হিসেবে তাঁকে রাখা হয়নি। এমনকি বরাদ্দ অর্থও ইউএনও নিজেই উত্তোলন করেছেন। যেহেতু কোনো কাজে তাঁকে রাখা হয়নি, তাই ঘর নির্মাণের কাজের মান নিয়ে ভবিষ্যতে কোনো অভিযোগ উত্থাপন হলে তিনি কোনো দায়ভার নেবেন না। কমিটির একজন সদস্য হিসেবে ১২ জানুয়ারি চিঠি দিয়ে এ বিষয়টি তিনি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও ইউএনওকে জানিয়েছেন।

সিংরইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকে কাজের তদারকি করতে বলা হয়নি। তাই কাজের মান নিয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না।

ইউএনও এরশাদ উদ্দিন বলেন, পিআইওর চিঠি দেওয়াটা ধৃষ্টতার শামিল। এ ধরনের চিঠি দেওয়া সরকারি শিষ্টাচার বিবর্জিত ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অবমাননাকর আচরণের শামিল। তিনি পিআইওকে তিন দিনের সময় দিয়ে ১২ জানুয়ারি পাল্টা চিঠি দিয়ে কারণ দর্শাতে বলেছেন। পিআইও তাঁর সঙ্গে ঘর পরিদর্শন করেছেন। তখন কোনো ত্রুটি দেখলে সংশোধন করার কথা বলতেন।