ইউএনও–এসি ল্যান্ড নেই, উন্নয়ন সমন্বয় সভায় নিক্সন চৌধুরী

সাংসদ মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী
সংগৃহীত

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) অনুপস্থিতিতে উন্নয়ন সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ইউএনও এই সভা আহ্বান করে এলেও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের আহ্বানে রোববার এই সভা হয়। এতে যোগ দেন ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সাংসদ মুজিবর রহমান ওরফে নিক্সন চৌধুরী।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, রোববার ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ সম্মেলনকক্ষে উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় ইউএনও এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উপস্থিত ছিলেন না। তবে সভায় ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সফিকুর রহমান এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) গাজী রবিউল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। যদিও উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সদস্য না হওয়ায় সভায় তাঁদের উপস্থিত থাকার কথা ছিল না। কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন সাংসদ নিক্সন চৌধুরী।

ওই সভায় অনুপস্থিত থাকার কারণ জানতে চাইলে ভাঙ্গার ইউএনও মো. রকিবুর রহমান খান প্রথম আলোকে বলেন, মাসিক আইনশৃঙ্খলা কিংবা উন্নয়ন সভা তিনিই আহ্বান করেন। কিন্তু এ জাতীয় কোনো সভা তিনি আহ্বান করেননি। তিনি বলেন, রোববার ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে কী জাতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, তা তাঁর বোধগম্য নয়। তিনি বলেন, উন্নয়ন সমন্বয় সভা হলে ওসি কিংবা ভাঙ্গা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের সেখানে থাকার কথা নয়।

সভার বিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম হবিবুর রহমান বলেন, প্রতি মাসের দ্বিতীয় সোমবার উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা হয়। তবে রাজনৈতিক বিভিন্ন কারণে গত সপ্তাহে এ সভা করা যায়নি। আগামীকাল সোমবার সরকারি বন্ধের দিন হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার ইউএনওকে রোববার এ সভা আহ্বান করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি কোনো সভা আহ্বান করেননি। উপজেলা চেয়ারম্যান বলেন, এ কমিটির উপদেষ্টা সাংসদ। তিনি এলাকায় থাকলে এ সভায় যোগ দেন। তিনি ছিলেন বলেই সভা আহ্বান করতে বলা হয়। কিন্তু ইউএনও রোববার সকালে ফরিদপুর চলে যান, তাই তিনিই সভা আহ্বান করেছেন।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আরও বলেন, বন্যার কারণে ভাঙ্গার অনেক ক্ষতি হয়েছে। এ জন্য উন্নয়ন সভা করা জরুরি ছিল। ওসি ও সার্কেলের উপস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাঁরা ওই সভার সদস্য না হলেও সাংসদকে প্রটোকল দেওয়ার জন্য উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে ইউএনও বলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তাঁকে কোনো সভা আহ্বান করতে বলেননি। তা ছাড়া রোববার জেলা প্রশাসনের মাসিক রাজস্ব সভা ছিল। ওই সভায় সব ইউএনও ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) যোগ দেন। এ জন্য তিনি ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওই সভায় যোগ দিতে ফরিদপুর চলে যান।

প্রসঙ্গত, ১০ অক্টোবর চরভদ্রাসনে উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনের দিন ইউএনওকে ফোন করে এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে গালাগাল এবং জেলা প্রশাসককে ‘রাজাকার’ বলে আলোচনায় আসেন নিক্সন চৌধুরী। এ ঘটনায় ১৫ অক্টোবর চরভদ্রাসন থানায় মামলা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির করা মামলায় নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে উপনির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন, সরকারি কর্মকর্তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, গালাগাল ও হুমকির অভিযোগ আনা হয়। এরপর থেকে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাংসদ নিক্সন চৌধুরীর টানাপোড়েন চলছে।

আরও পড়ুন