ইউএনওর বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের মানববন্ধন

নরসিংদীর শিবপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে ঘুষ, হয়রানি, দরপত্র ছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নসহ নানা অভিযোগে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় ঠিকাদারেরা। আজ বুধবার দুপুরে শিবপুরের ইউএনও কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

পরে স্থানীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ লিখিতভাবে সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। মানববন্ধন ও সাংবাদিক সম্মেলনে উপজেলার অর্ধশতাধিক ঠিকাদার অংশ নেন।

তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হুমায়ুন কবির জানান, এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। ঠিকাদারদের সঙ্গে সরাসরি তাঁর কোনো কাজ নেই। কমিশনের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলতে পারবেন। আর কিছু কিছু কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন করার জন্য তিনি নিজেই তদারকি করেছেন।

ঠিকাদারদের লিখিত অভিযোগে বলা হয়, হুমায়ুন কবির শিবপুরের ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি শিবপুর পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর যোগদানের পর থেকে পৌরসভার এবং উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের বিভিন্ন কাজে অনৈতিক সুবিধা নিতে ঠিকাদারদের হয়রানি করছেন।

এর মধ্যে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের গ্রামীণ রাস্তার ওপর ব্রিজ নির্মাণ কাজে ১২ শতাংশ কমিশন নিয়ে থাকেন। কোনো ঠিকাদার কমিশন দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে কারণ ছাড়াই তাঁর ফাইল আটকে রেখে নানা অজুহাতে বিল কেটে দেন এবং বিল দিতে দেরি করেন।

এ ছাড়া শিবপুর পৌরসভার আইইউআইডিপি প্রকল্পের আওতায় ছয়টি প্রকল্পের কাজে ১০ শতাংশ কমিশন নেন। ঠিকাদারদের জামানতের টাকা এক বছর পর তোলার নিয়ম থাকলেও টাকা উত্তোলন করতে গেলে তাঁকে উৎকোচ বা কমিশন দিতে হয়। অন্যথায় দীর্ঘদিন ফাইল আটকে রেখে হয়রানি করেন।

ঠিকাদারেরা বলেন, ইউএনও হওয়ার সুবাদে প্রভাব খাটিয়ে তিনি কোনো রকম দরপত্র ছাড়াই শিবপুর উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ, লেক নির্মাণ, আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক বরাদ্দ দেওয়া দুস্থ–অসহায় মানুষকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়। ওই ঘর নির্মাণের কাজটি কোনো দরপত্র ছাড়াই ইউএনও নিজেই সম্পন্ন করেন। এতে নিম্নমানের ইট, দরজা ও টিন দিয়ে ঘর নির্মাণ করা হয়।

মেসার্স রুমি এন্টারপ্রাইজের মালিক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘২০১৭-১৮ অর্থবছরে এশিয়া ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (এডিপি) আওতায় আমরা কয়েকজন মিলে ১৬টি প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পন্ন করে বুঝিয়ে দিয়েছি। কিন্তু ইউএনওর চাহিদামতো কমিশন দিতে না পারায় এখনো বিল পাইনি।’

মেসার্স মাহির এন্টারপ্রাইজের মালিক ফজলে রাব্বি খান বলেন, ‘আমি একটি ব্রিজের কাজ করেছি। বিল উত্তোলনের সময় আমার কাছ ১২ শতাংশ কমিশন নিয়েছেন। আবার জামানতের টাকা উত্তোলনের সময়ও টাকা দাবি করেন। কিন্তু আমি না দেওয়ায় নির্ধারিত সময়ের সাত মাস পর জামানতের টাকা দিয়েছেন।’