ইউপি চেয়ারম্যানের বিচার দাবিতে মাঠে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় আকবর আলী নামের এক অশীতিপর বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে হেনস্তা ঘটনার বিচার দাবিতে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের প্রতিবাদ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ ফটকের সামনে
প্রথম আলো

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় আকবর আলী (৮০) নামের এক অশীতিপর বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে হেনস্তা ঘটনার বিচার দাবিতে এবার মাঠে নেমেছে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। ঘটনার পেছনের হোতা উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মহির উদ্দিনকে গ্রেপ্তার ও তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে তারা মানববন্ধন করেছে।

রংপুর বিভাগীয় মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ ও বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ হাতীবান্ধা উপজেলা শাখার আয়োজনে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে এ কর্মসূচি পালিত হয়। উপজেলা পরিষদের ফটকের সামনে লালমনিরহাট-বুড়িমারী স্থলবন্দর মহাসড়কে দাঁড়িয়ে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে বক্তব্য দেন রংপুর বিভাগীয় মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের সভাপতি সফিয়ার রহমান, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ঐক্য পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আজিজুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও পাটগ্রাম মহিলা কলেজের প্রভাষক মনিরুল ইসলাম, হাতীবান্ধা মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক রনিউল ইসলাম, সহসভাপতি জামিয়ার এবং ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মহোর আলী।

গত শনিবার সকালে উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের জাওরানী এলাকায় ওই চেয়ারম্যানের বাড়িতে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্তার ঘটনা ঘটে।

এ সময় বক্তারা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নির্যাতন করে চেয়ারম্যান কীভাবে বুক ফুলিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘুরে বেড়ান? প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, ওই চেয়ারম্যানকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক। তা না হলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

তবে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এরশাদুল আলম বলেন, ঘটনার পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যান মহির উদ্দিনসহ অন্যান্য আসামি পলাতক। পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

গত শনিবার সকালে উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের জাওরানী এলাকায় ওই চেয়ারম্যানের বাড়িতে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হেনস্তার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরদিন রোববার চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন ও গ্রামপুলিশের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী। আকবর আলীর বাড়ি উত্তর জাওরানী গ্রামে।

গ্রামপুলিশ নয়, আমি নিজেই মোটরসাইকেল দিয়ে আকবর আলীকে আমার বাড়ি নিয়ে যাই। সেখানে তাঁর ছেলের গরুচুরির টাকা ফেরত দিতে বলি। আকবর আলীকে কোনো মারধর করা হয়নি।
মহির উদ্দিন, ভেলাগুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান

লিখিত অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলীর ছেলের বিরুদ্ধে গরুচুরির অভিযোগ তুলে গ্রামপুলিশ দিয়ে ওই মুক্তিযোদ্ধাকে বাড়ি থেকে জোর করে তুলে নিয়ে নিজের বাড়িতে নেন চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন। এরপর তাঁর হুকুমে গ্রামপুলিশ চেয়ারের সঙ্গে জোরপূর্বক ওই মুক্তিযোদ্ধার হাত বেঁধে রাখেন। পরে ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করেন।

তবে চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। এর আগে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, গ্রামপুলিশ নয়, তিনি নিজেই মোটরসাইকেল দিয়ে আকবর আলীকে তাঁর বাড়ি নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে তাঁর ছেলের ‘গরুচুরির’ টাকা ফেরত দিতে বলেন। আকবর আলীকে কোনো মারধর করা হয়নি।