ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নয় সদস্যের অনাস্থা

উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ লুট, ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ-দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৯ জন ইউপি সদস্য অনাস্থা জানিয়েছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে লিখিত অনাস্থা প্রস্তাবটি গাইবান্ধার জেলা প্রশাসককে দেওয়া হয়েছে।

লিখিত অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেন ইউপি সদস্য জয়নাল আবেদিন, জামাল উদ্দিন, মো. হাবিজার রহমান, মো. আবুল হোসেন, মো. হোসেন আলী, মো. ইয়াছিন আলি, রতন কুমার বর্মণ, সংরক্ষিত আসনের (মহিলা) সদস্য লিপি বেগম ও ইসমতারা বেগম।

প্রস্তাবে ইউপি সদস্যরা উল্লেখ করেছেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যান মো. তরিকুল ইসলাম সরকারি বিধি না মেনে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দের কথা পরিষদের সদস্যদের জানালেও পরবর্তী সময়ে ভুয়া রেজুলেশন ও সই-স্বাক্ষর দেখিয়ে সম্প্রতি ৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। এ ছাড়া এলজিএসপির বরাদ্দের অর্থে নিজ বাড়িতে হাওয়াখানা নির্মাণসহ ব্যক্তিগত প্রজেক্টে বিভিন্ন প্রকল্প বরাদ্দ দেখিয়ে বিপুল অর্থ লুটপাট করেছেন তিনি। পাশাপাশি করোনা দুর্যোগকালে দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দের ত্রাণসামগ্রী, নগদ অর্থ ও বিভিন্ন ভাতা বিতরণে ব্যাপক নয়-ছয়, স্বজনপ্রীতি আর স্বেচ্ছাচারিতা করেছেন।

শুধু তাই নয়, এলাকার দুস্থ-অসহায় বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড ইউপি সদস্যদের মধ্যে বণ্টন না করে উল্টো সুবিধাভোগীদের কাছে টাকা আদায় করেন চেয়ারম্যান। এ ছাড়া হাটবাজারের অর্থ, রাজস্ব খাতের অর্থ ও ইউপি ট্যাক্স আদায়ের অর্থ দিয়ে উন্নয়নমূলক কাজ না করে সব অর্থ আত্মসাৎ করেন। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তরিকুল ইসলাম ইউপি সদস্যদের বিভিন্ন হুমকি দেন। তাই তার অপসারণসহ দ্রুত অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ইউপি সদস্যরা।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম দাবি করেন, ‘আমি ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই প্রতিপক্ষ আমার বিরুদ্ধে গুজব রটাতে উঠেপড়ে লেগে আছে। ওই মহলের প্ররোচনায় ইউপি সদস্যরা এমন মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী সরকারি প্রকল্পের বরাদ্দ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে বিভিন্ন উন্নয়মূলককাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এখানে কোনো বরাদ্দের অর্থই আত্মসাতের ঘটনা ঘটেনি।’

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন বলেন, ইউপি সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাবের লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন তিনি। অনাস্থাপত্রের বিষয়ে সরকারি বিধি মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।