চাষের জন্য ইজারা নেওয়া জমিতে কারখানা

চাষের জন্য ইজারা দেওয়া জমিতে হয়েছে চালকল ও বস্তা তৈরির কারখানা। পুকুরও তৈরি করেছেন দখলদারেরা। খোঁজ নেয় না কর্তৃপক্ষ।

একটি বস্তার কারখানার সামনে সাইলোর জমিতে মাটি ফেলে দখল করা হয়েছে। সম্প্রতি বগুড়ার সান্তাহারেপ্রথম আলো

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য মজুতাগারের (সাইলো) ইজারা দেওয়া জমিগুলোর শ্রেণি পরিবর্তন করা হয়েছে। চাষাবাদের জন্য ইজারা দেওয়া হলেও সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে চালকল, পুকুর ও বসতবাড়ি। এ কাজ করতে গিয়ে নির্ধারিত পরিমাণ জমির বাইরের অংশও দখল করা হয়েছে।

যাঁরা ইজারা পাননি, তাঁরাও সাইলোর জমি দখল করেছেন। সাইলো সড়ক ও সান্তাহার স্টেডিয়াম এলাকায় অবৈধভাবে দখল করে প্রায় অর্ধশত পুকুর খনন করা হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব কার্যক্রম চললেও উচ্ছেদ বা জমির শ্রেণি পরিবর্তনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি সাইলো কর্তৃপক্ষ।

সান্তাহার সাইলো কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, সান্তাহারে দুটি সাইলোর মোট জমির পরিমাণ ৬০ দশমিক ২১ একর। এর মধ্যে রাস্তা ৩৬ দশমিক ৯৬ একর। রাস্তার দুই পাশে আছে অব্যবহৃত জমি। যার হিসাব সাইলো কর্তৃপক্ষের কাছে নেই।

সাইলোর যান্ত্রিক প্রকৌশলী মেহেদী হাসান জানান, রাস্তার পাশের অব্যবহৃত জমি ৯০ জনকে চাষাবাদ ও ৮৬ জনকে দোকানঘর নির্মাণের জন্য ইজারা দেওয়া হয়। শর্ত অনুযায়ী কোনোভাবেই জমির ধরন বা শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। কেউ শর্ত ভঙ্গ করলে তাঁর ইজারা বাতিল করা হবে।

সম্প্রতি সান্তাহার শহরের পাশে সাইলো এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার পাশে বস্তা তৈরির কারখানার পাশাপাশি প্রায় ১৫টি চালকল তৈরি করা হয়। কারখানা ও চালকলের মালিকেরা তাঁদের নির্ধারিত জায়গার বাইরেও কারখানা ও চাতাল সম্প্রসারণ করেছেন। এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে টুটুল হোসেন, ফজু হোসেন, আবদুল হামিদ নামে তিন চালকলমালিক জায়গা সম্প্রসারণের কথা স্বীকার করে বলেন, পর্যায়ক্রমে ওই সব জমিও ইজারা নেওয়া হবে।

অন্যদিকে সান্তাহার স্টেডিয়াম এলাকায় গেলে কথা হয়, অবৈধভাবে তৈরি করা পুকুরের মালিক আবদুর রহমান, মতিয়ার রহমান ও ফজলুর রহমানের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, জায়গা পড়ে থাকায় তাঁরা সেখানে পুকুর খনন করেছেন। ইজারা নেওয়ার নিয়মের কথা বললে তাঁরা বলেন, অচিরেই জমি ইজারা নেবেন।

সান্তাহার সাইলোর সুপারিনটেনডেন্ট ফয়জুল্লাহ শিবলী মুঠোফোনে বলেন, দ্রুতই অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শ্রেণি পরিবর্তনের বিষয়ে বলেন, এমনটা করা হলে ইজারা বাতিল করা হবে।