ইভিএমে কারচুপি না হলে আমিই জয়লাভ করব: বিএনপি প্রার্থী সিরাজুল

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার নির্বাচন ২৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সিরাজুল ইসলাম মনি। প্রথম আলোকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে নির্বাচন ও পৌরসভার সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি শাহ আলম
বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম

প্রশ্ন :

কাউন্সিলর পদে বেশ কয়েকটি নির্বাচন করেছেন। এবার প্রথম মেয়র পদে দলীয় প্রতীক নিয়ে ভোট করছেন। অভিজ্ঞতার কোনো পার্থক্য আছে কি?

সিরাজুল ইসলাম: তিনবার ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। ওয়ার্ড কাউন্সিলর হলেও অনেক দিন ধরে পৌর এলাকার মানুষের কল্যাণে কাজ করে আসছি। গোটা পৌর এলাকার মানুষ আমাকে চেনেন। তাই অভিজ্ঞতা পজিটিভ।

প্রশ্ন :

এবার প্রথমবারের মতো চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় ইভিএমে ভোট হবে। ভোটারদের উপস্থিতি বা ভোট কেমন হবে বলে মনে করেন?

সিরাজুল ইসলাম: ইভিএম বিষয়ে ভোটারদের তেমন ধারণা নেই। তাই ভোটের প্রচারণার সময় ইভিএম বিষয়েও প্রচারণা চালাচ্ছি। সব মিলে উপস্থিতি সন্তোষজনক হবে বলে মনে করি।

প্রশ্ন :

ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে বা ভোট দিতে উদ্বুদ্ধ করতে আপনি কী করছেন?

সিরাজুল ইসলাম: প্রায় প্রতিটি ভোটারের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করছি। তাঁদের বোঝাচ্ছি যে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করতে হলে ভোটকেন্দ্রে যেতে হবে।

প্রশ্ন :

এবারের নির্বাচনে কোন প্রার্থীকে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছেন?

সিরাজুল ইসলাম: নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকেই নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বলেই মনে করছি। তবে ভোটের দিক দিয়ে আমিই এগিয়ে যাব।

প্রশ্ন :

এবার কেমন নির্বাচন আশা করছেন? জয়লাভের প্রত্যাশা কতটুকু?

সিরাজুল ইসলাম: নির্বাচন ফেয়ার হবে বলেই মনে করছি। ভোটারদের যে সাড়া, ইভিএমে যদি কারচুপি না হয় ইনশা আল্লাহ আমিই জয়লাভ করব।

প্রশ্ন :

নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটারদের কী ধরনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন?

সিরাজুল ইসলাম: আসলে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভায় অনেক অবহেলিত এলাকা আছে। সঠিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় অনেক এলাকায় সামান্য বৃষ্টিপাতেই হাঁটুপানি জমে যায়। আমি নির্বাচিত হলে প্রতিটি ওয়ার্ডের নাগরিকদের মতামতের ভিত্তিতে উন্নয়ন কাজ করব।

প্রশ্ন :

কয়েক দফায় কাউন্সিলর ছিলেন। কোনো অতৃপ্তি আছে কি না?

সিরাজুল ইসলাম: আমার বাবা ১৯৬৫ থেকে টানা ২১ বছর জনপ্রতিনিধি ছিলেন এবং ২০০২ থেকে আমি ওয়ার্ড কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। পরিকল্পনার সময় মেয়র আমাদের মতামত নিলেও তা বাস্তবায়ন পর্যায়ে তেমন হয় না।

প্রশ্ন :

কাউন্সিলর হিসেবে বিগত সময়ে যা করেছেন, তাতে নিজেকে সফল বলে মনে করেন কি?

সিরাজুল ইসলাম: আমি নিজেকে সফল মনে করি। কারণ, রাস্তা, নালা ও বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন পুরো ওয়ার্ডবাসীর জন্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

প্রশ্ন :

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকা সমস্যায় জর্জরিত। আপনি নির্বাচিত হলে কোথা থেকে কাজ শুরু করবেন? বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে কি?

সিরাজুল ইসলাম: এখানে কোনো বাইপাস না থাকায় যানজট এখন বড় সমস্যা। তাই নির্বাচিত হলে ভিমরুল্লাহ থেকে মুন্না মোড় পর্যন্ত প্রথমে বাইপাস তৈরি করব। এরপর নালাগুলো সচল করব। মহল্লাভিত্তিক অকেজো রাস্তা সচল করা হবে। মাথাভাঙ্গা নদীর দৌলাতদিয়াড় অংশে প্রায় ১৫০ বিঘা জমি আছে। সেখানে পার্ক তৈরি করা হবে।

প্রশ্ন :

কাউন্সিলর হিসেবে মেয়রের সঙ্গে সমন্বয়ের অভিজ্ঞতা কেমন। নির্বাচিত হলে কাউন্সিলদেরকে কীভাবে পরিচালনা করবেন?

সিরাজুল ইসলাম: সমন্বয়ের অভিজ্ঞতা এককথায় ভালো নয়। আমি কথা দিচ্ছি, নির্বাচিত হলে কাউন্সিলরদের সঙ্গে নিয়েই পৌরসভাকে সাজাব।

প্রশ্ন :

পৌর শহরের বেশির ভাগ নালার (ড্রেন) সঙ্গে শৌচাগারে লাইন সংযোজন করা আছে, যা সরাসরি মাথাভাঙ্গা নদীতে পড়ায় এখন কেউ সেখানে গোসল করে না। মাথাভাঙ্গা নদী দূষণের হাত থেকে রক্ষায় আপনার পরিকল্পনা বলেন।

সিরাজুল ইসলাম: সিরিয়াসলি এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। প্রশাসনিকভাবে শক্ত না হওয়ায় এত দিন হয়নি।

প্রথম আলো : সাক্ষাৎকারের জন্য সময় দেওয়ায় ধন্যবাদ।

সিরাজুল ইসলাম: প্রথম আলোকেও ধন্যবাদ।