ইলেকট্রনিক পণ্যের বদলে পাঠাতেন আলু-পেঁয়াজ, হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা

অনলাইনে প্রতারণার অভিযোগে তানভিরুল আলমকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাবছবি: সংগৃহীত

চীন থেকে পণ্য আনার কথা বলে অনলাইনে প্রচারণা চালাতেন তিনি। বিশ্বাস স্থাপন করতে চীনা ভিসা ও পাসপোর্টও দেখাতেন ক্রেতাদের। পণ্য দেওয়ার কথা বলে বিকাশের মাধ্যমে করতেন টাকা আদায়। পরে গা ঢাকা দিতেন।

অনলাইনে এমন প্রতারণা করে শেষ রক্ষা হয়নি তাঁর। ভুক্তভোগীদের অনেক অভিযোগ পেয়ে এস এম তানভিরুল আলমকে (২৫) গতকাল শনিবার রাতে চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানার রাহাত্তারপুল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

র‍্যাব-৭ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) নুরুল আবছার প্রথম আলোকে বলেন, গত ১৭ জানুয়ারি একটি ফেসবুক গ্রুপে শীতের পণ্যের চাহিদা জানিয়ে পোস্ট করেন এক ভুক্তভোগী। ওই পোস্টে তানভিরুল আলম কমেন্ট করে ইনবক্সে পণ্যে সরবরাহ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। ক্রেতার সঙ্গে আলোচনা করে পণ্যের পরিমাণসহ দাম নির্ধারণ করা হয় ২০ হাজার টাকা। বিশ্বাস স্থাপনের জন্য তিনি ভুক্তভোগীকে নিজের পাসপোর্ট, চীনের ভিসা ও পরিচয়পত্র মেসেঞ্জারে পাঠান। এরপর দামের অর্ধেক ১০ হাজার টাকা বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ করা হয় তানভিরুলকে।

গত ২ ফেব্রুয়ারি পণ্যের জন্য যোগাযোগ করা হলে তানভিরুলের মুঠোফোনের নম্বরটি বন্ধ পান ভুক্তভোগী ব্যক্তি। পরে নগরের পাঁচলাইশ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তিনি; পাশাপাশি র‍্যাবকেও লিখিত অভিযোগ দেন। র‍্যাব ছায়াতদন্ত করে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আসামিকে গ্রেপ্তার করে।

র‍্যাব কর্মকর্তা নুরুল আবছার বলেন, গ্রেপ্তার তানভিরুলের ফেসবুক-কেন্দ্রিক বিভিন্ন ব্যবসা রয়েছে। তিনি করোনা মহামারিকে কাজে লাগিয়ে ‘বিদেশি পণ্য সরবরাহের ব্যবসা’ গড়ে তোলেন। এ কাজে লোভনীয় মূল্যে অসংখ্য পণ্যের অফার দিয়ে গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম টাকাও নিয়েছেন। কিন্তু পরে গ্রাহকদের তা সরবরাহ করেননি।

এ ছাড়া তানভিরের বিরুদ্ধে অনলাইনে বিভিন্ন পণ্যের চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে নিম্নমানের পণ্য পাঠানোরও অভিযোগ রয়েছে বলে জানান র‌্যাব কর্মকর্তা। বলেন, প্রায়ই আসল পণ্য না দিয়ে আলু, পটল, পেঁয়াজ বা সাবানের মতো পণ্য পাঠিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তানভির। আর বিকাশে টাকা গ্রহণের জন্য নিজের নম্বর ব্যবহার না করে পরিচিত নিরক্ষর ও নিম্ন আয়ের লোকদের নম্বর তাঁদের অজান্তে ব্যবহার করতেন তিনি। কেউ টাকা পাঠালে বিকাশ অ্যাকাউন্টধারীকে বলতেন, তাঁর চিকিৎসার জন্য শুভাকাঙ্ক্ষীরা টাকা পাঠিয়েছেন।