‘ইলেকশনে না গিয়ে বিএনপির অবস্থা মুসলিম লীগের মতো হয়ে যাচ্ছে’

শফি আহমদ চৌধুরী
ফাইল ছবি

নানা অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করে আসছে বিএনপি। এতে দলের বড় ক্ষতি দেখছেন সিলেট-৩ আসনে উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া শফি আহমদ চৌধুরী। বিএনপিদলীয় সাবেক এই সাংসদের মতে, দলটির অবস্থা মুসলিম লীগের মতো হয়ে যাচ্ছে।

বিএনপি থেকে বহিষ্কার হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় আজ রোববার দুপুরে প্রথম আলোকে এসব কথা বলেন শফি আহমদ চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, দুপুর পর্যন্ত তাঁর কাছে বহিষ্কারের কোনো চিঠি আসেনি। তবে তিনি গণমাধ্যমের মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছেন।

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন শফি আহমদ চৌধুরী। তাই কেন্দ্র থেকে এমন সিদ্ধান্ত আসবে, এ রকম মানসিক প্রস্তুতি তাঁর ছিল বলে জানিয়েছেন শফি আহমদ। তিনি বলেন, ‘আমি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে রাজনীতি করেছি। তাঁর হাত ধরে বিএনপিতে যোগ দিয়েছি। এখন যাঁরা নেতৃত্বে আছেন, তাঁরা হয়তো তখন রাজনীতিও বুঝতেন না। আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে, অথচ আমার কথাগুলো তাঁরা শোনেনওনি।’

কী সেই কথা? শফি আহমদ বলেন, ‘আমাকে শোকজ নোটিশ করা হয়েছিল। আমি তিন পাতার একটি চিঠিতে জবাব দিয়েছিলাম। সেখানে আমি নির্বাচন করার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছি। এলাকার মানুষের চাওয়া, জনতার চাপে পড়ে আমি ভোটে দাঁড়িয়েছি। বিএনপি ভোটের দল। ভোটে না যেতে যেতে মাঠপর্যায়ে খুবই করুণ অবস্থায় আছে দলটি। ইলেকশনে না গিয়ে বিএনপির অবস্থা মুসলিম লীগের মতো হয়ে যাচ্ছে।’

বহিষ্কারের পর বিএনপি রাজনীতির সঙ্গে শফি আহমদের বিচ্ছিন্নতা তৈরি হলো। ভোটের মাঠে এখন কী অবস্থা হবে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি মাটি ও মানুষের রাজনীতি করি। এই রাজনীতি থেকে কেউ বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না। স্থানীয় কিছু নেতা আছেন, তাঁরা বিভিন্ন সময় আর্থিকভাবে ফায়দা নেন, তাঁরাই কেবল সক্রিয়। আমার পক্ষে জনসাধারণ আছে। জীবনের শেষ নির্বাচন, অবশ্যই বিজয়ী হব।’

সিলেট নগরের উপকণ্ঠের তিনটি উপজেলা দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ নিয়ে গঠিত সিলেট-৩ আসন। এখানে শফি আহমদ ছাড়াও তিন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তাঁরা হচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত হাবিবুর রহমান, জাতীয় পার্টির মনোনীত আতিকুর রহমান ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনোনীত জুনায়েদ মুহাম্মদ মিয়া।
শফি আহমদ চৌধুরী ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে সিলেট-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। ওই নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন। পরে ১৯৯৬ (১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন) ও ২০০১ সালের নির্বাচনে জিতে এ আসনের বিএনপিদলীয় সাংসদ ছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি বিএনপিদলীয় প্রার্থী হলেও আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থী মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর কাছে হেরে যান।

করোনায় সংক্রমিত হয়ে গত ১১ মার্চ মারা যান সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী। এরপর ১৫ মার্চ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী, ২৪ জুন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। প্রতীক বরাদ্দ হবে ২৫ জুন। আগামী ২৮ জুলাই ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ হবে।