ইয়াবা বিক্রির টাকা নিয়ে বন্ধুদের দ্বন্দ্বে খুন হন জয়পুরহাটের সুমন

জয়পুরহাট জেলার মানচিত্র
প্রতীকী ছবি

জয়পুরহাটে সুমন হোসেন (২৩) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তার যুবক পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, ১৫টি ইয়াবা বড়ি বিক্রির টাকা নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জের ধরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

নিহত সুমন হোসেনের বাড়ি নীলফামারীর ডোমার উপজেলার হংসরাজ গ্রামে। তিনি জয়পুরহাট শহরের দেওয়ান পাড়া মহল্লায় থাকতেন। গত ১৩ মার্চ রাত নয়টায় তিনি দেওয়ান পাড়া মহল্লার বাড়ি থেকে জয়পুরহাট শহরের উদ্দেশে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরদিন জয়পুরহাট সদর উপজেলা ভিটি গ্রামের একটি ফলদ ও বনজ বাগানে গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে পাওয়া যায়।

ওই দিনই পরিবারের সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে ভর্তির তিন দিন পর ১৭ মার্চ তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটলে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সুমন হোসেন সেখানে এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৪ মার্চ মৃত্যুর কাছে হেরে যান। এ ঘটনায় ২৫ মার্চ জয়পুরহাট সদর একটি হত্যা মামলা করা হয়। জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলমকে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

পুলিশ সুপার (এসপি) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এ হত্যা মামলার ক্লু খুঁজে পাচ্ছিলেন না। মামলা তদন্তের একপর্যায়ে সুমনের বন্ধুর মাদকসংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধের কথা জানতে পারেন। এই বিরোধের সূত্র ধরে সন্দেহভাজন বন্ধুদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) ভোররাতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সুমনের বন্ধু ভিটি হাজীপাড়া গ্রামের আবদুর রউফের ছেলে মো. জয়কে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়।

এসপি মাছুম আহম্মদ ভূঞা জানিয়েছেন, গ্রেপ্তার মো. জয় জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, ১৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রির টাকা নিয়ে সুমনের সঙ্গে তাঁর বন্ধু মো. সৈকতের বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জেরে সৈকত তেঘর রেলগেটসংলগ্ন মুশফিকুলের নার্সারিতে সুমনকে ডেকে নিয়ে আটকে রাখেন। সৈকত তাঁর অন্য বন্ধু মো. জয়, শিহাব, সুজাউলকে সেখানে ডেকে নিয়ে আসেন। তাঁরা সুমন হোসেনের কাছে ১৫টি ইয়াবা বিক্রির টাকার দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে সুমন হোসেনকে পিটিয়ে জখম করেন। সুমনকে তাঁরা মৃত ভেবে সেখানে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। আসামি মো. জয় ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জয়ের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সৈকত ও সুজাউলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এসপি মাছুম আহাম্মদ ভূঞা বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে ‘ক্লু-লেস’ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। শিগগিরই এ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে।