ঈশ্বরগঞ্জে ছয় দিনে পাঁচজনের মৃত্যু, প্রকৃত কারণ অজানা

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ময়মনসিংহের উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছয় দিনে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা সর্দি-কাশি, জ্বর ও গলাব্যথায় আক্রান্ত ছিলেন। তবে তাঁদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যায়নি। এ অবস্থায় নানা গুজব-গুঞ্জনের সৃষ্টি হচ্ছে এবং করোনায় আক্রান্ত হয়ে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে কেউ কেউ সন্দেহ করছেন।

ঈশ্বরগঞ্জ মধুপুর বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতে এক ব্যক্তি (৬০) মারা যান। গতকাল বুধবার সকালে জানাজা শেষে তাঁর মৃতদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। তিনি জ্বর, সর্দি-কাশি ও গলাব্যথায় ভুগছিলেন। লোকজন জানান, করোনা সংক্রমণ সম্পর্কে টেলিভিশনে বিশেষজ্ঞরা যেসব তথ্য প্রচার করে থাকেন, ওই ব্যক্তির অসুস্থতা সে রকমই ছিল। এ বিষয়ে গতকাল বিকেলে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢাকা থেকে আসা হাজারো লোক হোম কোয়ারেন্টিন (বাড়িতে সঙ্গনিরোধ) না মেনে মধুপুর বাজারসহ গ্রামের হাটবাজারে আড্ডা বসাচ্ছেন। ওই ব্যক্তিও মধুপুর বাজারের বাসিন্দা। এখন কী থেকে কী হয়েছে, তা তো ভাই আমি বলতে পারব না।’ এ ঘটনায় আশপাশের লোকজন আতঙ্কিত বলেও তিনি জানান।

মঙ্গলবার বিকেলে মারা যান এক কলেজছাত্র (২০)। সম্প্রতি ঢাকা থেকে জ্বর, সর্দি-কাশি ও গলাব্যথা নিয়ে তিনি এখানে বোনের বাড়িতে ওঠেন। সেখানেই তিনি মারা যান। স্বজনেরা রাতেই তাঁর লাশ নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার নিজ গ্রামে নিয়ে দাফন করেন। এই তরুণের মৃত্যুর পর তাঁর ভাগনি জ্বর, সর্দি-কাশি ও গলাব্যথায় আক্রান্ত হন। গতকাল তাঁর শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নুরুল হুদা খান।

এদিকে ২৬ মার্চ ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার এক তরুণ (৩৫), উপজেলার একটি গ্রামের এক তরুণী (২৫) ও পরদিন তরুণীর চাচা (৫৫) মারা যান। ওই তিনজন জ্বর, সর্দি-কাশি ছাড়াও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। এই পাঁচটি মৃত্যুর ঘটনা ভাবিয়ে তুলেছে সংশ্লিষ্ট এলাকার অধিবাসীদের।

পাঁচটি মৃত্যুর ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে গতকাল ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসচিব নুরুল হুদা খান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, মাঠপর্যায়ে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীদের দেওয়া তথ্যে আগের মৃত্যুর ঘটনাগুলোর সঙ্গে করোনার উপসর্গের মিল পাওয়া যায়নি। এক কলেজছাত্র মারা যাওয়ার পর তাঁর মরদেহ কেন্দুয়া নিয়ে দাফন করে ফেলা হয়েছে। কলেজছাত্রের অসুস্থ ভাগনিকে (২৫) ময়মনসিংহের একটি হাসপাতালে ভর্তি করে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা করার পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। এ ছাড়া অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের সব সদস্যকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে।