উখিয়ায় ৬ রোহিঙ্গা হত্যাকাণ্ডে আরসার আরেক সদস্য গ্রেপ্তার, আদালতে দায় স্বীকার

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির
প্রথম আলো ফাইল ছবি

কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শিবিরে ছয়জন হত্যার ঘটনায় আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) আরেক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। তিনি গতকাল মঙ্গলবার রাতে কক্সবাজারের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব কুমার দাশের আদালতে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

ওই ব্যক্তির নাম জানে আলম (৩৫)। তিনি বালুখালী শিবিরের বাসিন্দা মোহাম্মদ ছলিমের ছেলে। গত সোমবার ক্যাম্প-৯-এর সি-১১ ব্লকে অভিযান চালিয়ে একটি দেশীয় অস্ত্রসহ জানে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন রোহিঙ্গা শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরান হোসেন। তিনি বলেন, সোমবার গ্রেপ্তারের পর জানে আলমকে উখিয়া থানা-পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। এই নিয়ে আলোচিত এই হত্যা মামলায় জড়িত অভিযোগে ২০ জন রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করা হলো। তাঁদের অধিকাংশ আরসা সদস্য পরিচয় দিয়ে ক্যাম্পে অপকর্ম চালাতেন। যদিও ক্যাম্পে আরসা নামে মিয়ানমারের সশস্ত্র কোনো গোষ্ঠীর অস্তিত্ব নেই।

গত ২২ অক্টোবর গভীর রাতে উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৮-এর ভেতরে মাদ্রাসা ও মসজিদে হামলা চালিয়ে মাদ্রাসার তিন শিক্ষক, দুই ছাত্রসহ ছয়জন রোহিঙ্গাকে হত্যা করে অস্ত্রধারী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা।

পুলিশ জানায়, গত ২২ অক্টোবর গভীর রাতে উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৮-এর ভেতরে দারুল উলুম নদওয়াতুল ওলামা আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও মসজিদে হামলা চালায় অস্ত্রধারী রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। তারা গুলি ও গলা কেটে মাদ্রাসার তিন শিক্ষক, দুই ছাত্রসহ ছয়জন রোহিঙ্গাকে হত্যা করে। হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন ও অপরাধীদের গ্রেপ্তারে মাঠে নামেন এপিবিএন সদস্যরা।

৮ এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামাল হোসেন বলেন, আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানে আলম বলেছেন, ঘটনার দিন রাতে তিনি ধারালো অস্ত্র দিয়ে রোহিঙ্গা হাবিব উল্লার ছেলে ইব্রাহীমকে (নিহত ছয়জনের একজন) গলা কেটে হত্যা করেন।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার লম্বাশিয়া শিবিরে অস্ত্রধারীরা গুলি করে হত্যা করে রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহকে। তিনি আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিচ অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএইচপিএইচআর) চেয়ারম্যান ছিলেন। মুহিবুল্লাহ হত্যার রেশ না–কাটতেই ২২ অক্টোবর রাতে পাশের আরেকটি ক্যাম্পের মাদ্রাসা ও মসজিদে ঢুকে ছয়জন রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়।