উজিরপুরে আট কেন্দ্রে এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ বিএনপি প্রার্থীর
বরিশালের উজিরপুর পৌরসভা নির্বাচনে আজ সোমবার শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে আটটি কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপি মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী মো. সহিদুল ইসলাম। এ ছাড়া বিএনপি প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্টকে পুলিশ আটক করে ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন সহিদুল।
তবে বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ সম্পর্কে বরিশালের জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল আলম বলেন, বিএনপি প্রার্থী কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি। মৌখিকভাবে যে অভিযোগ দিয়েছেন, তার কোনো সত্যতা নেই। তাঁর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট নির্বাচন নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় উজিরপুর ডাকবাংলো–সংলগ্ন প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিং করে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী উজিরপুর পৌর বিএনপির সভাপতি সহিদুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র গিয়াস উদ্দিন ব্যাপারী বহিরাগত সন্ত্রাসীদের জড়ো করে প্রতিটি ভোটকেন্দ্র নিয়ন্ত্রণে নেন। ৯ নম্বর ভোটকেন্দ্র রসুলাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যতীত ৮টি ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দিয়েছেন সরকারদলীয় সমর্থকেরা। বেলা ১১টায় ৪ নম্বর ভোটকেন্দ্র আলহাজ বি এন খান ডিগ্রি কলেজে সরকারদলীয় সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করে। এ সময় অফিসে দায়িত্বে থাকা বিএনপি প্রার্থীর সমর্থক অমল চন্দ্র দাস (৫৫), বায়জিদ হোসেন (৩১), নজরুল ইসলাম (৩৮) ও শিল্পী আক্তারকে (৩৫) মারধর করা হয়।
সহিদুল ইসলাম বলেন, ওই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা বিএনপির প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মো. শাহাব উদ্দিন বিষয়টি বরিশাল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করতে যান। তখন তাঁকে মারধর করে পুলিশে দেওয়া হয়। পুলিশ তাঁকে থানায় আটকে রাখে। এতে ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
সহিদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘রোববার রাতে আমার এজেন্টদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ পরিচয়ে সরকারদলীয় ক্যাডাররা হানা দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়েছে। রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ইচলাদি কেন্দ্রের এজেন্ট রফিকুল ইসলাম নির্বাচনী অফিস থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে তাঁকে মারধর করে কাগজপত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়।’
সরেজমিনে সকাল সাড়ে ১০টায় উজিরপুর গার্লস কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে ৬টি বুথের মধ্যে মাত্র ২ নম্বর বুথে সাইদুল ইসলাম নামে ধানের শীষের একজন এজেন্ট পাওয়া যায়। ভোট সম্পর্কে অভিযোগ আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, থাকলেও কথা বলার সুযোগ নেই। এক ঘণ্টা পর সাড়ে ১১টায় গিয়ে কোনো এজেন্ট পাওয়া যায়নি। দুপুর ১২টায় উজিরপুরের হানুয়া শিশুকল্যাণ প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে ধানের শীষের কোনো এজেন্ট পাওয়া যায়নি। বেলা দুইটার পর পাঁচটি কেন্দ্রে গিয়ে কোথাও ধানের শীষের এজেন্ট পাওয়া যায়নি।
বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন ব্যাপারী বলেন, মিথ্যা অভিযোগ করা বিএনপির মজ্জাগত স্বভাব। নিশ্চিত পরাজয় জেনে তিনি আবোলতাবোল বকছেন। এজেন্ট বের দেওয়া প্রসঙ্গে গিয়াস উদ্দিন বলেন, জ্বালাও–পোড়াওয়ের রাজনীতি করে বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হয়েছে। বিএনপির প্রার্থীর এজেন্ট দেওয়ার মতো কোনো ভোটার বা সমর্থক ছিল না।
বিএনপির প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট শাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার সম্পর্কে উজিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, নির্বাচন কমিশনে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়ায় নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তাঁকে আটক করা হয়েছিল। পরে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে নেন।