উঠানে সাপ রেখে স্বর্ণালংকার-টাকা নিয়ে উধাও সাপুড়েরা

প্রতারণার শিকার পরিবারের এক শিশু সাপের খেলা দেখাতে আসা এক সাপুড়ের ছবি মুঠোফোনে তুলেছিলেন। ওই ছবি। সোমবার মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার বিরইনতলা গ্রামে
সংগৃহীত

দুই সাপুড়ে বাড়ির উঠানে সাপের খেলা দেখাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে কৌশলে বাড়ির নারীদের কাছ থেকে ১০ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে সাপ রেখেই তাঁরা চম্পট দেন। ঘটনাটি সোমবার মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের বিরইনতলা গ্রামে ঘটেছে। এ ব্যাপারে জুড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অজ্ঞাতনামা দুই সাপুড়ে কাঠের বাক্সে ভরা একটি সাপ নিয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিরইনতলা গ্রামের বাসিন্দা উস্তার আলীর বাড়িতে যান। এ সময় বাড়িতে কোনো পুরুষ ছিলেন না। একপর্যায়ে সাপুড়েরা বাড়ির উঠানে সাপের খেলা দেখানো শুরু করেন। তা দেখতে জড়ো হন বাড়ির নারী ও শিশুরা। খেলা দেখানো শেষে সাপুড়েরা বলেন, নারীদের ব্যবহৃত স্বর্ণালংকার ভেজানো পানি দিয়ে সাপকে গোসল করাতে হবে। এ ছাড়া ৫ হাজার টাকা লাগবে। কাজ সম্পন্ন হলে স্বর্ণালংকার-টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

খেলা দেখানো শেষে সাপুড়েরা বলেন, নারীদের ব্যবহৃত স্বর্ণালংকার ভেজানো পানি দিয়ে সাপকে গোসল করাতে হবে। এ ছাড়া ৫ হাজার টাকা লাগবে। কাজ সম্পন্ন হলে স্বর্ণালংকার-টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

সাপুড়েরা বলেন, এটি করলে পরিবারের মঙ্গল হবে, অন্যথায় ক্ষতি হতে পারে। নারীরা তাঁদের সহজে বিশ্বাস করে ফেলেন। এরপর সাত-আটজন নারী ঘর থেকে স্বর্ণালংকার ও পাঁচ হাজার টাকা মিলিয়ে আনেন। এক সাপুড়ে তা প্যান্টের পকেটে ভরে রাখেন। সাপুড়েরা বলেন, তাঁদের ‘ওস্তাদ’ এলেই কাজ শুরু হবে। পরে সাপের বাক্স রেখে ‘ওস্তাদকে’ এগিয়ে আনার কথা বলে বাইরে বেরিয়ে তাঁরা আর ফেরেননি। পরে বিষয়টি মুঠোফোনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানানো হয়। তাঁদের পরামর্শে বিকেলে বাড়ির কর্তা উস্তার আলী থানায় গিয়ে অভিযোগ দেন।

ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) স্থানীয় ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাহবুব আলম বলেন, ঘটনার সময় তাঁরা উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে একটি কাজে ছিলেন। সাপুড়েরা প্রতারণা করে অন্তত ১০ ভরি স্বর্ণালংকার ও ৫ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়েছেন। খেলা দেখানোর সময় প্রতারণার শিকার পরিবারের এক শিশু মুঠোফোনে এক সাপুড়ের ছবি তুলে রেখেছে। ছবিটি পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। বাক্সবন্দী সাপ উস্তারের বাড়িতে রয়েছে।

জুড়ী থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিপি বেগম বলেন, এই কাজে জড়িত ব্যক্তিরা প্রতারক চক্রের সদস্য বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।