উত্তাল পদ্মায় থেমে নেই ট্রলারে যাত্রী পারাপার

পদ্মা নদীতে বড় বড় ঢেউ দেখা দেওয়ায় মাঝেমধ্যেই লঞ্চ বন্ধ রাখছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু থেমে নেই শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও ট্রলারে যাত্রী পারাপার।

বৈরী আবহাওয়ায় নদী উত্তাল হলে মাঝেমধ্যে দৌলতদিয়া–পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চ বন্ধ রাখা হচ্ছে। তবে থেমে নেই ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে মানুষজন পারাপার। গতকাল দুপুরে মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার পাটুরিয়া ঘাট এলাকায়।ছবি: এম রাশেদুল হক

বৈরী আবহাওয়ার কারণে কয়েক দিন ধরে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথ উত্তাল। পদ্মা নদীতে বড় বড় ঢেউ দেখা দেওয়ায় মাঝেমধ্যেই এ পথের সব লঞ্চ বন্ধ রাখছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু থেমে নেই শ্যালো ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও ট্রলারে যাত্রী পারাপার। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হচ্ছেন মানুষ।

গতকাল শনিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, দৌলতদিয়ার ঘাট এলাকা থেকে নৌকায় যাত্রী পারাপার করছেন কিছু অসাধু ট্রলারচালক। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও লঞ্চের পরিবর্তে দ্রুত নদী পার হতে ট্রলারে উঠছেন অনেকেই। আবার লঞ্চঘাট এলাকা থেকেও ট্রলার বোঝাই করে ছেড়ে যেতে দেখা যায়। নদীর উত্তাল ঢেউয়ে হেলেদুলে নৌকা চলছে। বিপরীত দিকে পাটুরিয়া লঞ্চঘাট থেকেও একইভাবে ট্রলারে যাত্রী পার হতে দেখা যায়। এ সময় ওই এলাকায় বিআইডব্লিউটিএ বা নৌ পুলিশের কাউকে দেখা যায়নি।

রাজবাড়ী সদর উপজেলার ধুঞ্চি এলাকার লোকমান সরদার বলেন, তিনি ঘাটে এসে দেখেন যাত্রী কম থাকায় লঞ্চ ছাড়তে দেরি হচ্ছে। জরুরি কাজে মানিকগঞ্জে যেতে হবে, তাই লঞ্চের ভরসা না করে পাশ থেকে ট্রলার ছাড়তে দেখে তিনিসহ কয়েকজন একত্রে ট্রলারে উঠে বসেন। ঝুঁকি আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঝুঁকি তো কিছু থাকেই। ভরা নদী, বৈরী আবহাওয়ায় নদীতে বড় বড় ঢেউ দেখা যাচ্ছে। অনেকেই তো পার হচ্ছেন।’

ট্রলারচালক পরিচয় দিয়ে আলামিন নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘ঘাটে বসেই ছিলাম। বৃষ্টির মধ্যে অনেকেই লঞ্চে যাচ্ছেন না। যাত্রী কম থাকায় লঞ্চও ছাড়ছে দেরি করে। এ সুযোগে আমরা কয়েকজন যাত্রী নিয়ে পাটুরিয়ার উদ্দেশে যাচ্ছি। বর্তমানে কাজ কম থাকায় আমার মতো অনেকেই বেকার বসে আছেন। মাঝেমধ্যে বৃষ্টির সঙ্গে বাতাস থাকলে লঞ্চ বন্ধ থাকে। তখন কিছু যাত্রী পারাপার করি। এতে যা কামাই হয়, তা দিয়ে অন্তত কয়েক দিন চলা যায়।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয়ের ট্রাফিক পরিদর্শক আফতাব হোসেন বলেন, ট্রলারে যাত্রী পারাপারের বিষয়টি তাঁর জানা নেই। এমনকি এমন দৃশ্য তাঁর চোখেও পড়েনি। মাঝেমধ্যে লঞ্চ বন্ধ থাকলে সুযোগ বুঝে কিছু যাত্রী পার করতেও পারে। এমনটি দেখলে অবশ্যই বন্ধ করা হবে।

দৌলতদিয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ওসি) মোন্নাফ আলী বলেন, ‘ট্রলারে পারাপার হওয়া মানুষ সাধারণ যাত্রী নয়। গত শুক্রবার এ রকম ট্রলার বোঝাই করে নদী পার হতে দেখেছি। এরা নির্দিষ্ট কোনো গ্রামের মানুষ, এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যাচ্ছে।’ ফেরিঘাট এলাকা থেকে ট্রলার ছাড়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এমনটি হওয়ার কথা নয়। এমনটি হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’