উন্নয়নকাজের চাঁদা চেয়ে কারাগারে আ.লীগ নেতা

চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তার ঘোড়াঘাটের পালশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা ময়নুল ইসলাম
সংগৃহীত

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার একটি মাদ্রাসার উন্নয়নকাজ চলাকালে চাঁদা দাবি করা আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই নেতার নাম ময়নুল ইসলাম (৪৭)। তিনি উপজেলার পালশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। গত রোববার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তারের পর আজ সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলার ডুগডুগি বাজারসংলগ্ন এতিমখানা ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা কমিটির কাছে নির্মাণকাজের বরাদ্দ থেকে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন ময়নুল ইসলাম ও তাঁর সহযোগীরা। এমন অভিযোগ এনে গত ৩০ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসার সভাপতি হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে ঘোড়াঘাট থানায় ময়নুল ইসলামসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

ময়নুল ইসলাম নিজেও শিক্ষক। তিনি হাকিমপুর উপজেলার বাওনা উচ্চবিদ্যালয়ে কৃষি শিক্ষা বিষয়ে পড়ান। চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠায় তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন আগে ময়নুল ইসলাম ও তাঁর সহযোগীরা মাদ্রাসা কমিটির কাছে ওই চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে মাদ্রাসার উন্নয়নকাজ করতে দেওয়া হবে না বলে ভয়ভীতি দেখানোর একপর্যায়ে কাজই বন্ধ করে দেন। এর কয়েক দিন পর পুনরায় নির্মাণকাজ শুরু হলে ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে তিনি মাদ্রাসায় গিয়ে কমিটির সদস্যদের মারপিট ও লাঞ্ছিত করেন। এ ঘটনায় স্থানীয় ব্যক্তিরা এগিয়ে এলে ময়নুল ইসলামের সহযোগীরা চলে যান। এ ঘটনা নিয়ে থানায় অভিযোগ দিলে মাদ্রাসা কমিটির সদস্যদের প্রাণনাশেরও হুমকি দেন ময়নুলের সহযোগীরা।

দলীয় পদবি ব্যবহার করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মাদক ব্যবসা, মাদক সেবন, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, অপহরণের অভিযোগ আছে ময়নুল ইসলামের বিরুদ্ধে। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট, নবাবগঞ্জ ও ঢাকার সবুজবাগ থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মাদক ও চাঁদাবাজির আটটি মামলা আছে।

ময়নুলকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজিমউদ্দিন বলেন, কয়েক দিন ধরেই তাঁকে (ময়নুল) গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছিল পুলিশ। রোববার রাতে হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাট থানার যৌথ অভিযানে হাকিমপুর উপজেলার পানামা পোর্ট এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দলীয় পদবি ব্যবহার করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মাদক ব্যবসা, মাদক সেবন, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, অপহরণের অভিযোগ আছে ময়নুল ইসলামের বিরুদ্ধে। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট, নবাবগঞ্জ ও ঢাকার সবুজবাগ থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মাদক ও চাঁদাবাজির আটটি মামলা আছে। সব মামলাতেই তিনি জামিনে ছিলেন।