উপচে পড়া ভিড় হোটেল-রিসোর্টে

টানা তিন দিন ছুটি হওয়ায় শ্রীমঙ্গলে পর্যটকদের ভিড় জমেছে। বিভিন্ন চা-বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাঁরা। গতকাল ভানুগাছে
ছবি: প্রথম আলো

শুক্র ও শনিবার সপ্তাহের দুদিনের সরকারি ছুটি এবং রোববার ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে টানা তিন দিনের ছুটিতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। তিন দিনের ছুটিতে বুকিং হয়ে গেছে সব হোটেল–রিসোর্ট। প্রায় ৯০ শতাংশ হোটেল–রিসোর্ট হাউসফুল। সরেজমিনে পর্যটন স্পটগুলোতে নানা বয়সের মানুষের ঢল দেখা গেছে।

শ্রীমঙ্গলের সারি সারি চা-বাগানের নয়নাভিরাম দৃশ্য মুগ্ধ করে পর্যটকদের। বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই), চা জাদুঘর, বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন, হাইল হাওর, বাইক্কা বিল, বার্ড পার্ক, নীলকণ্ঠ সাত রঙের চা–কেবিন, চা-কন্যা ভাস্কর্য, বধ্যভূমি-৭১-সহ নানা স্পট ঘুরে দেখেন দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা। এর পাশাপাশি রয়েছে লাল পাহাড়, শংকর টিলা, গরম টিলা, ভাড়াউড়া লেক, ব্রিটিশদের সমাধিস্থল ডিনস্টন সিমেট্রি, হরিণছড়া গলফ মাঠ, সুদৃশ্য জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ, হিন্দুদের তীর্থস্থান সুপ্রাচীন নির্মাই শিববাড়ি পর্যটকেরা খুব কম সময়ে দেখতে পারেন।

চা-বাগানঘেরা উঁচু-নিচু টিলা ঘেঁষে এখানে গারো, খাসি, ত্রিপুরা, মণিপুরিসহ নানা জাতিগোষ্ঠীর বাস। চা-বাগান আর মণিপুরিপাড়ায় রয়েছে মণিপুরি হস্তশিল্পের বিশাল মেলা। পর্যটকেরা এসব জায়গায় ঘুরে ক্যামেরায় বন্দী করে নেন নিজের ছবিগুলো। পরিবার-পরিজন নিয়ে এসব স্থানে ঘুরে বেড়ান তাঁরা। এ ছাড়া শ্রীমঙ্গলের পার্শ্ববর্তী কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক ঘুরে দেখতে পারেন তাঁরা।

গতকাল শুক্রবার শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা পর্যটকেরা শ্রীমঙ্গলের পর্যটন স্পটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। চা-বাগানের ভেতরে পর্যটক তাঁদের মনের মতো করে ছবি তুলছেন। ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে আসা কবির আহমেদ বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারিসহ একসঙ্গে তিন দিনের ছুটি পাওয়ায় শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে এসেছেন তিনি। সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানরাও এসেছে। চা-বাগানের আশপাশের দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে দেখছেন তিনি।

রিয়াদ হায়দার নামের এক পর্যটক বলেন, করোনার কারণে দেশের বাইরে এখন ঘুরতে যাওয়া যাচ্ছে না। তাই এ সময়ে শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে এসেছেন তিনি। এর আগেও তিনি কয়েকবার শ্রীমঙ্গলে এসেছিলেন। শ্রীমঙ্গলের প্রাকৃতিক পরিবেশ বারবার তাঁকে এখানে টেনে নিয়ে আসে।

পর্যটন সেবা সংস্থার সাংগঠনিক সম্পাদক ও গ্রিনলিফ গেস্ট হাউস অ্যান্ড ইকো ট্যুরিজমের স্বত্বাধিকারী এস কে দাশ সুমন বলেন, ‘এমনিতেই শীতের সময় শ্রীমঙ্গলে পর্যটকদের আনাগোনা থাকে। সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকেরা এখানে আসেন প্রকৃতির একটু কাছে থাকতে। করোনার কারণে এখন বিদেশি পর্যটক আসছেন না। কিন্তু দেশের ভ্রমণপিয়াসি মানুষ এখানে ঘুরতে আসছেন। টানা তিন দিনের ছুটির কারণে সপ্তাহখানেক আগ থেকে হোটেল-রিসোর্ট বুকিং হওয়া শুরু হয়েছে। আজ শ্রীমঙ্গলের ৯০ শতাংস হোটেল–রিসোর্ট হাউসফুল। এভাবে রুম বুকিং হলে আমরা করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারব।’