উপজেলা চেয়ারম্যান ২২ দিন ধরে কর্মস্থলে নেই, কার্যক্রম ব্যাহত

মোজাম্মেল হোসেন

সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন ওরফে রোকন ২২ দিন ধরে কর্মস্থলে নেই। এ অবস্থায় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভা হয়নি।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কর্মস্থলে না থাকায় চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বরাদ্দের প্রকল্প অনুমোদনসহ নানা উন্নয়ন কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসন ও এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ উপজেলায় প্রতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভার আয়োজন করা হয়। সে অনুযায়ী গত ১৪ জানুয়ারি উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভা হওয়ার কথা ছিল। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সর্বশেষ গত ১০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় উপজেলা পরিষদে এসে ঘণ্টা দুয়েক অফিসে বসে দাপ্তরিক কাজকর্ম করেছেন। এরপর থেকেই তিনি আর অফিসে আসছেন না। তিনি কর্মস্থলে না থাকায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) প্রকল্প অনুমোদন, দ্বিতীয় পর্যায়ের টিআর, কাবিখার প্রকল্প অনুমোদনসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে।

মোজাম্মেল হোসেনের সিএ (গোপনীয় সহকারী) রুনু নিয়োগী বলেন, ‘স্যার (উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান) কিছুদিন ধরে কর্মস্থলে নেই। আমার সঙ্গে মোবাইল ফোনে স্যারের কোনো যোগাযোগ নেই। তবে স্যারের এক আত্মীয়ের মাধ্যমে আমি জানতে পেরেছি, স্যার শারীরিকভাবে অসুস্থ। তিনি চিকিৎসার কারণে ঢাকায় রয়েছেন। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই তিনি কর্মস্থলে ফিরবেন বলে জানতে পেরেছি।’

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, মোজাম্মেল হোসেনের নিজ ইউনিয়ন হচ্ছে পাইকুরাটি। ওই ইউনিয়নের সুনই জলমহালে গত ৭ জানুয়ারি রাত আটটার দিকে মৎস্যজীবী শ্যামাচরণ বর্মণকে (৬৫) গলা কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। এরপর থেকেই তাঁর ব্যক্তিগত তিনটি মুঠোফোন নম্বরই বন্ধ রয়েছে। তবে চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠজনেরা এই শ্যামাচরণ বর্মণ হত্যার ঘটনায় তাঁর জড়িত থাকার অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন।

মোজাম্মেল হোসেনের ব্যক্তিগত তিনটি মুঠোফোন নম্বরে গতকাল রোববার বিকেলে একাধিকবার কল দিলেও সেগুলো বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনতাসির হাসান প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব কিছুদিন ধরে কর্মস্থলে নেই। তিনি কর্মস্থলে না থাকায় জানুয়ারি মাসের উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভা করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া এডিপির ও টিআর-কাবিখা (সাধারণ) বরাদ্দের প্রকল্পের অনুমোদনও আটকে রয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত রয়েছে।