উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ কাল, সব কেন্দ্রেই ইভিএমে ভোট

এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় আদালতের নির্দেশে নির্বাচন স্থগিত হয়েছিল।

উপনির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শেষ হয়েছে বুধবার। তবে গতকাল বৃহস্পতিবারও সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনের স্বতন্ত্র এক প্রার্থী নির্বাচনী সভা করেছেন। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী নিজ বাসভবনে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। আগামীকাল শনিবার এই আসনে উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

ভোটাররা জানিয়েছেন, এখন কী সংখ্যক ভোটার কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেন, এর হিসাব-নিকাশ অনেকেই করছেন। পাশাপাশি কোন প্রার্থীর জয়ের পাল্লা ভারী, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

সিলেট নগরের উপকণ্ঠে অবস্থিত দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা নিয়ে সিলেট-৩ আসন গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৫২ হাজার। গত ১১ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে এ আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী মারা যান। এক দফা তারিখ পিছিয়ে গত ২৮ জুলাই এ আসনের উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল।

তবে এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় আদালতের নির্দেশে নির্বাচন স্থগিত হয়েছিল। পরে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ৪ সেপ্টেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠানের দিন ঘোষণা করে। এখানে সব কটি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ হবে।

নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চারজন প্রার্থী। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান (নৌকা), জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান (লাঙ্গল), নির্বাচনে নেমে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক সাংসদ শফি আহমদ চৌধুরী (মোটরগাড়ি) ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের জুনায়েদ মুহাম্মদ মিয়া (ডাব)। জুনায়েদকে মাঠে দেখা না গেলেও অপর তিন প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারণায় তৎপর ছিলেন।

গতকাল সকালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কামালবাজার এলাকার নিজ বাড়িতে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেছেন। এ সময় তিনি ভোটারদের কেন্দ্রে নিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফুর রহমানের মৃত্যুর খবর পেয়ে বিকেলে হাবিবুর রহমান নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ছুটে যান।

হাবিবুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই এলাকার মানুষের সঙ্গে আছি। আমি তৃণমূলের মানুষ। বিজয়ী হলে তৃণমূলের মানুষের সঙ্গে থেকে এলাকার উন্নয়নে কাজ করে যাব। সেই সঙ্গে যেসব নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, সেসব অক্ষরে অক্ষরে পালন করার চেষ্টা থাকবে। নির্বাচনী প্রচারণা চলাকালে যেখানেই গিয়েছি, সেখানেই মানুষ আমাকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেছেন। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী।’

জাতীয় পার্টির প্রার্থী আতিকুর রহমানও বৃহস্পতিবার দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজারে তাঁর বাসভবনে দলীয় নেতা-কর্মী ও এজেন্টদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। তিনি বলেন, একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা করছেন ভোটাররা। যেহেতু ইভিএমে ভোট হবে, তাই ভোটারদের আগ্রহও আছে। ভোটে বিজয়ের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।

গতকাল বিকেল চারটায় দক্ষিণ সুরমা উপজেলার দাউদপুরে আয়োজিত এক নির্বাচনী সভায় বক্তব্য দেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক সাংসদ শফি আহমদ চৌধুরী।

এ সময় তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন আমার জীবনের শেষ নির্বাচন। দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জবাসীর সুখে-দুঃখে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব। তবে কোনো নির্বাচনে ভোটের জন্য আর আপনাদের কাছে আসব না। হয়তো কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে দেখা হবে। অতীতে আমি এই অঞ্চলের মানুষের জন্য যা করেছি, তা বিবেচনার দায়িত্ব আপনাদের।’