উপাচার্যসহ সাতজনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার আবেদন

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা বিকৃত করে প্রদর্শনের ঘটনায় উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহসহ সাত শিক্ষকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাজহাট থানায় বিশ্ববিদ্যালয়টির দুজন শিক্ষক এ অভিযোগ করেন।

একই ঘটনা তদন্তে আজ শুক্রবার জেলা প্রশাসক আসিব আহসান তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছেন। এতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম রব্বানীকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন মহানগর পুলিশ কমিশনারের একজন প্রতিনিধি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সদরুল আলম। তাঁদের আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

ঘটনাটি দুঃখজনক। তবে তিনি এ বিষয়ে আর মন্তব্য করতে চান না।
তাবিউর রহমান প্রধান, শিক্ষক, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ

তাজহাট থানায় অভিযোগটি করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক জাতীয় পতাকার নকশা পরিবর্তন করেন। তাঁরা সবুজের ভেতর বৃত্তের পরিবর্তে চারকোনা আকৃতির লাল কাপড় দিয়ে পতাকা বানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক চত্বরে তাঁরা এই পতাকাসহ ছবি তুলে প্রকাশ করেন। এতে সংবিধানের ৪ (২) অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করা হয়েছে। ওই শিক্ষকেরা জাতীয় পতাকা মেঝে ও পায়ের নিচে স্পর্শ করেও ছবি তোলেন। এতে সংবিধানের ৭ (ক) অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন হয়েছে, যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ।

ওই অনুষ্ঠান আয়োজনের হুকুম দিয়েছেন উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। অন্য বিবাদীরা হলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক তাবিউর রহমান প্রধান ও রহমতুল্লাহ, গণিত বিভাগের শিক্ষক হাফিজুর রহমান, বাংলা বিভাগের শিক্ষক পরিমল চন্দ্র বর্মণ, বিপণনবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক মাসুদুল হক ও ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক সোহাগ আলী।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মুঠোফোন নম্বরে কয়েকবার কল করে সংযোগটি বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে বিবাদীদের মধ্যে তাবিউর রহমান বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। তবে তিনি এ বিষয়ে আর মন্তব্য করতে চান না।

তদন্ত চলছে। তদন্তের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আকতারুজ্জামান, ওসি, তাজহাট থানা

এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একই ঘটনায় জাতীয় পতাকা বিকৃতি ও অবমাননার অভিযোগে ৯ শিক্ষক ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তাজহাট থানায় আরও একটি অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আরিফুল ইসলাম। তিনি পতাকার লাল বৃত্তের বিকৃতি ও পায়ের নিচে লাগানোর অভিযোগ করেন।

অভিযোগে তাবিউর, রহমতউল্লাহ, পরিমল ও সোহাগ ছাড়া পাঁচজনকে বিবাদী করা হয়। তাঁরা হলেন ভূগোল পরিবেশবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক শামীম হোসেন, বিপণনবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হাসান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রামপ্রসাদ বর্মণ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক কাইয়ূম খান ও উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব আমিনুর রহমান।

তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতারুজ্জামান বলেন, দুটি অভিযোগই পেয়েছেন। তদন্ত চলছে। তদন্তের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।