ঋণ দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে পালানোর সময় পরিচালক আটক

দিনাজপুর জেলার মানচিত্র

দরিদ্র মানুষকে আশার আলো দেখানোর নাম করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ‘আশার আলো সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড’। ওই সমিতিতে ৫ হাজার টাকা জমা দেওয়ার দুই সপ্তাহ পরে ঋণ পাওয়া যাবে ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। ঋণের জন্য দুই শতাধিক গ্রাহক পাঁচ হাজার করে টাকা জমা করেছেন সমিতিতে। পরে ঋণ নিতে এসে গ্রাহকেরা দেখেন, সমিতিতে তালা ঝুলছে। এরপর গত সোমবার রাত পর্যন্ত গ্রাহকেরা সমিতি কার্যালয় ঘিরে রাখেন। একপর্যায়ে পেছন দরজা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পরিচালক আবু হায়াত আল মাহমুদকে (৩৯) আটক করেন গ্রাহকেরা। জরুরি সেবা ৯৯৯–এ জানানোর পর পুলিশ সমিতির পরিচালককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

সোমবার রাতে দিনাজপুর সদর উপজেলার ঈদগাহবস্তি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আটকের পর মঙ্গলবার বিকেলে আবু হায়াতকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তাঁর বাড়ি দিনাজপুর সদর উপজেলার আউলিয়াপুর চওড়া গ্রামে। সোমবার মধ্যরাতে মকসেদুল ইসলাম নামের এক ভুক্তভোগী সমিতির পরিচালকসহ ১০ জনের নামে এবং ৫-৬ জনকে অজ্ঞাতনামা দেখিয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি প্রতারণার মামলা করেছেন।

মামলার এজাহারসূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই মাস আগে ঈদগাহ আবাসিক এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে ওই সমিতির কার্যক্রম শুরু হয়। অফিসের সামনে টাঙানো সাইনবোর্ডে রেজিস্ট্রেশন নাম্বার লেখা রয়েছে ০০০০৩০। পরিচালকসহ ১০-১৫ জন এনজিও কর্মী পরিচয় দিয়ে গত দুই মাসে এসব গ্রাহককে লোভ দেখিয়ে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

ভুক্তভোগীদের একজন আমেনা খাতুন বলেন, কয়েক দিন আগে সমিতির একজন মাঠকর্মী তাঁর বাড়িতে গিয়ে একটি ফরম পূরণ করে নেন। তাঁরা ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। পরের দিন আমেনা পাঁচ হাজার টাকা জোগাড় করে দেন। ১১ এপ্রিল আমেনার ঋণ পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সোমবার বিকেলে জানতে পারেন, অফিসের গেটে তালা ঝুলছে। তাঁর গ্রামেই ৫-৬ জন ঋণ নেওয়ার জন্য টাকা দিয়েছেন।

দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, জরুরি সেবায় ফোন পেয়ে ভুক্তভোগীদের কথা শুনে সমিতির পরিচালককে আটক করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মানুষের কাছে টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।