‘এই কয়টা দিন শান্তিতে খাইতে পারমু’

আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের সহায়তায় প্রথম আলো ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় সিলেটের কানাইঘাটে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়। শুক্রবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন পঞ্চাশোর্ধ্ব সালমা বেগম। ত্রাণের বড়সড় একটি প্যাকেট হাতে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেছেন তিনি। প্রথম আলো ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় ও আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের সহায়তায় দেওয়া ত্রাণসামগ্রীর প্যাকেটটি পেয়ে বন্যাদুর্গত সালমা বলেন, ‘এই কয়টা দিন শান্তিতে খাইতে পারমু।’

সালমা বেগম পেশায় গৃহপরিচারিকা। তিনি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার নন্দীরাই গ্রামের বাসিন্দা। স্বামী মারা গেছেন। এখন তিন মেয়েকে নিয়ে তাঁর সংসার। কিছুদিন আগেও তাঁর ঘরে বন্যার হাঁটুসমান পানি ছিল। এখন পানি নেমে গেলেও দুর্ভোগ শেষ হয়নি। সালমা বলেন, পরিবারে তিনিই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বন্যা চলাকালে উঠানে হাঁটতে গিয়ে পায়ে লোহা ঢুকে যায় তাঁর, কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেননি। ফলে এখনো খুঁড়িয়ে হাঁটতে হয় তাঁকে।

আজ শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সালমা বেগমের মতো বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১০০ জনের মধ্যে কানাইঘাট উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ত্রাণের প্রতি প্যাকেটে ছিল ১০ কেজি চাল, ১ লিটার সয়াবিন তেল, ১ কেজি মসুর ডাল, ১ কেজি ছোলা, ১ কেজি লবণ, ১০০ গ্রাম গুঁড়া মরিচ ও ১০০ গ্রাম গুঁড়া হলুদ। ত্রাণ পেয়ে সবাই খুশি মনে বাড়ি ফেরেন।

ত্রাণ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যরা
ছবি: প্রথম আলো

ত্রাণসামগ্রী বিতরণকালে কানাইঘাট-জৈন্তা সার্কেলের জ্যেষ্ঠ এএসপি আবদুল করিম, কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম, প্রথম আলো ট্রাস্টের সমন্বয়ক মাহবুবা সুলতানা, প্রথম আলো সিলেট কার্যালয়ের নিজস্ব প্রতিবেদক সুমনকুমার দাশ, সংবাদকর্মী এম এ হান্নান, নিজাম উদ্দিন ও মাহবুবুর রশীদ, প্রথম আলো বন্ধুসভা সিলেটের সভাপতি হুমাইরা জাকিয়া ও সাধারণ সম্পাদক অন্তর শ্যাম উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সংবাদকর্মীসহ বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এএসপি আবদুল করিম বলেন, প্রথম আলো যেভাবে বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, তা প্রশংসার দাবি রাখে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘বন্যায় কানাইঘাটে অনেক মানুষ বিপাকে পড়েছেন। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রথম আলো মহান একটা দায়িত্ব পালন করেছে। আমরা আন্তরিকভাবে আইডিএলসি ও প্রথম আলোকে ধন্যবাদ জানাই।’

ত্রাণ পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে আবদুস শহীদ বলেন, তাঁর সাত সদস্যের পরিবার। তিনি ও বড় ছেলে পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। নিজে পেশায় দরজি। অসুস্থ হওয়ায় নিজে এখন খুব একটা কাজ করতে পারেন না। বন্যায় ঘরের বেড়া ভেঙে গেছে। অথচ টাকার অভাবে সারাতে পারছেন না। এই ত্রাণ পেয়ে তাঁর সপ্তাহখানেকের জন্য খাবারের চিন্তা দূর হয়েছে।

বন্যার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন। সহায়তা পাঠানো যাবে ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে। হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল, হিসাব নম্বর: ২০৭২০০১১১৯৪, ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা। অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে।