এক ঘণ্টার ডিআইজি কিশোরী আফসানা

আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে এক ঘণ্টার জন্য বরিশালের ডিআইজির প্রতীকী দায়িত্ব পালন করে আফসানা কবির
ছবি: সাইয়ান

বরিশাল বিভাগীয় উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) পদে এক ঘণ্টার দায়িত্ব পালন করেছে কিশোরী আফসানা কবির (১৭)। ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামানের কাছ থেকে প্রতীকী দায়িত্ব নেয় সে।

কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে নারীর ক্ষমতায়নের উদাহরণ হিসেবে আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আফসানা বরগুনা সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। সে বরগুনা শহরের কলেজ রোডের বাসিন্দা গোলাম কবির ও আসমা আক্তার দম্পতির মেয়ে।

আজ বুধবার বেলা ১১টায় বরিশালের কাশিপুর এলাকায় ডিআইজি কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আফসানকে ডিআইজির দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ সময় আফসানা বলে, ‘এটা আমার জীবনের একটি স্মরণীয় ঘটনা। নারীর অধিকার আদায়ের পথে এটা অনুপ্রেরণা জোগাবে।’

পরে গোলটেবিল আলোচনায় নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ, বাল্যবিবাহ রোধসহ করণীয় তুলে ধরে কিশোরী আফসানা কবির। সেখানে সে আবৃত্তি করে, ‌‘আমি কন্যা, আমি দিগ্বিজয়ী বেশে তুলিতে পারি বন্যা। আমি তুফানে তুফান, বাজিমাত রাখিয়া যুদ্ধ করিয়া জয়, আলোর আভা ছড়াই আমি বিশ্বময়...।’

বরিশালের ডিআইজি রেঞ্জ কার্যালয়ে আফসানা কবির
ছবি: প্রথম আলো

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগীয় ব্যবস্থাপক শাহারুখ সোহেল প্রথম আলোকে বলেন, আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে ‘গার্লস টেকওভার’ শীর্ষক একটি প্রতীকী কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এর মাধ্যমে মেয়েরা যে সমান সুযোগ ও অধিকার পেলে সমানভাবে শিখতে, নেতৃত্ব দিতে, সিদ্ধান্ত নিতে ও সাফল্য পেতে পারে; সেটা প্রতিবছর বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে তুলে ধরা হয়। এই প্রতীকী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাপী মেয়েরা সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় পদগুলোতে কিছু সময়ের জন্য প্রতীকী ক্ষমতা গ্রহণের মধ্য দিয়ে সমতার দাবি তুলে ধরে।

কিশোরীদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য কী দরকার? এমন প্রশ্নের উত্তরে আফসানা বলে, ‘প্রথম ও প্রধান করণীয় হচ্ছে মনোবল বাড়াতে হবে। কিশোরীদের ভাবতে হবে, আমরা অবশ্যই সব পারি। সাহস নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার এই দৃঢ়তাই একটি কিশোরীকে সাহসী ও জয়ী করে তুলতে পারে।’

কিশোরীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়ে ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান বলেন, নারীরা রাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকলেও নানাভাবে বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন। এমন করে এক ঘণ্টার জন্য নয়, আজকের কন্যাশিশুরা ভবিষ্যতে দেশ পরিচালনায় সার্বক্ষণিক অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। কিশোরীদের আত্মবিশ্বাসী করতে পারলেই সেটা ত্বরান্বিত হবে।