এক জেলা থেকে অন্য জেলায় মানুষ ছুটছেন অটোরিকশায়

দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাতায়াত করছেন মানুষ। গত শনিবার বিকেলে রংপুর নগরের মর্ডান মোড়ের রংপুর -ঢাকা মহাসড়কে
ছবি: প্রথম আলো

করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে গণপরিবহণ বন্ধ। কিন্তু জরুরি প্রয়োজনে মানুষের চলাচল বন্ধ নেই। রংপুর অঞ্চলে লোকজনের একমাত্র বাহন হয়ে উঠেছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যেতে ভেঙে ভেঙে অটোরিকশা পরিবর্তন করে চলাচল করছেন লোকজন।

আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত রংপুর শহরের মডার্ন মোড় এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেল, লোকজন অটোরিকশায় করেই ছুটছে। কেউ বগুড়া, কেউবা গাইবান্ধা, আবার কেউ নাটোর, নওগাঁয়।

যাত্রী ও অটোরিকশার চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, রংপুর থেকে গাইবান্ধা যেতে তিন থেকে চারবার অটোরিকশা পরিবর্তন করতে হচ্ছে। প্রথমে রংপুর থেকে শঠিবাড়ি কিংবা বড়দরগা পর্যন্ত, ভাড়া পড়ছে ১৫০ টাকা। এরপর বড়দরগা থেকে পলাশবাড়ি পর্যন্ত ১০০ টাকা এবং পলাশবাড়ি থেকে গাইবান্ধা পর্যন্ত ১০০ টাকা। অর্থাৎ রংপুর থেকে গাইবান্ধায় যেতে অটোভাড়া পড়ছে ৩৫০ টাকা। কিন্তু বাসের ভাড়া ছিল ১০০ টাকা। বেশি টাকা পড়লেও এভাবেই লোকজন অটোরিকশায় চেপে জরুরি প্রয়োজনে ছুটে চলেছেন।

গাইবান্ধায় যাওয়ার পথে নূরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার এক নিকটাত্মীয় খুব অসুস্থ। তাকে দেখতে যেতে হবে। তাই বাধ্য হয়ে এভাবেই যাচ্ছি। তা ছাড়া বিকল্প কোনো পথ খুঁজে পাইনি।’

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক আনোয়ার মিয়া বলেন, ‘আমরা অটো নিয়ে রংপুরের বড়জোর শঠিবাড়ি কিংবা বড়দরগা পর্যন্ত চলাচল করছি। দিনে একবার যাওয়া-আসা করতে পারি। তাতে অটোর জমা ৪০০ টাকাসহ বাড়ির খরচের টাকা উঠে যায়।’
এভাবে রংপুর থেকে সাতবার অটো পরিবর্তন করে বগুড়া যেতে হচ্ছে অনেককে। এতে ভাড়া পড়ছে প্রায় ৪০০ টাকা। যেখানে বাসের ভাড়া ছিল ১৫০ টাকা।

বেশি টাকা ভাড়া পড়লেও লোকজন অটোরিকশায় চেপে জরুরি প্রয়োজনে ছুটে চলেছেন। রপুর নগরের মর্ডান মোড়ে
ছবি: প্রথম আলো

এদিকে দুপুর ১২টার দিকে রংপুর শহরের মেডিকেল মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, সৈয়দপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী যেতে একইভাবে অটোরিকশার ওপর নির্ভরশীল মানুষ। চালকেরা জানান, সৈয়দপুর থেকে দুই ধাপে অটোরিকশা পরিবর্তন করতে হচ্ছে। আর নীলফামারী যেতে রংপুর থেকে তিনবার এবং দিনাজপুর যেতে চার থেকে পাঁচবার অটোরিকশা পরিবর্তন করে লোকজন চলাচল করছেন।

অটোরিকশায় চেপে সৈয়দপুর যাওয়ার পথে মোস্তফা কামাল জানান, ‘এখন এমনিতেই রাস্তা ফাঁকা। একটু বেশি ভাড়া হয়তো পড়ছে, কিন্তু উপায় না পেয়ে যেতে হচ্ছে। সৈয়দপুরে যেতে এমনিতে বাসের ভাড়া ৫০ টাকা। সেখানে খরচ পড়ছে ২০০ টাকা।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সৈয়দপুরের এক শিক্ষক বলেন, ‘অটোরিকশা আছে বলে মানুষের উপকার হচ্ছে। কেননা, যেকোনো জায়গায় যেতে অটোরিকশা ভাড়া করে এখন যাওয়া যায়। সেই সঙ্গে ছয় থেকে সাতজন যাত্রী থাকে।’