এক ফুট জমির বিরোধে খুনের ঘটনায় দুই ভাইয়ের যাবজ্জীবন

রায় ঘোষণার পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুই ভাইকে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়া হয়। সোমবার বিকেলে আদালত চত্বরে
ছবি: প্রথম আলো

পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার পশ্চিম সোহাগদল গ্রামে জমিজমার বিরোধে জাকির হোসেন (২২) নামের এক পোশাকশ্রমিক হত্যার দায়ে দুই ভাইকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার বিকেলে জেলা ও দায়রা জজ মুহা. মুহিদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন নেছারাবাদ উপজেলার পশ্চিম সোহাগদল গ্রামের মৃত আবদুল মান্নান শেখের ছেলে মো. বাদশা শেখ (৫০) ও তাঁর ভাই কাইউম শেখ (৪৫)। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। মামলার বাকি পাঁচ আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, নেছারাবাদ উপজেলার পশ্চিম সোহাগদল গ্রামের আবদুর রশিদ মিয়ার বসতবাড়ির সীমানার এক ফুট জমি নিয়ে চাচাতো ভাই বাদশা শেখের পরিবারের বিরোধ ছিল। ওই জমিতে থাকা একটি চাম্বলগাছ বাদশা শেখের ভগ্নিপতি মন্টু হাওলাদার কেটে নিয়ে যান। ২০১২ সালের ৩০ অক্টোবর বিকেলে স্থানীয় একটি দোকানে এ নিয়ে সালিস বসে। সালিস চলাকালে আবদুর রশিদ মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন তর্কে জড়িয়ে পড়েন। তখন গণ্যমান্য ব্যক্তিরা সালিস বৈঠক ছেড়ে চলে যান। এরপর দুই পক্ষ বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে আবদুর রশিদ মিয়া ও তাঁর তিন ছেলে জাকির হোসেন, মো. সুমন ও মামুন হোসেনকে মারধর করেন। একপর্যায়ে বাদশা শেখের লাঠির আঘাতে জাকির মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ নভেম্বর দুপুরে তিনি মারা যান। পরের দিন জাকিরের বাবা আবদুর রশিদ মিয়া বাদী হয়ে বাদশা শেখকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা করেন।

২০১৩ সালের অক্টোবরে নেছারাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান মামলাটি তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর বাদীর পুনঃতদন্তের আবেদনের পর মামলার তদন্তভার পান পিরোজপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সদর দপ্তর) প্রশান্ত কুমার দে। ২০১৪ সালের ৩১ অক্টোবর মামলার তদন্ত শেষে তিনি সাত আসামির বিরুদ্ধে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সরকারি কৌঁসুলি খান মো. আলাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, রায়ে দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচ আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী কানাই লাল বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।’