ঢাকা-বরিশাল পথে এক বছর ধরে বন্ধ বিমানের ফ্লাইট

সম্প্রতি বরিশাল কার্যালয়ের ১১ জনকে বদলির পর বিমানের ফ্লাইট স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর গত বছরের মার্চে বরিশাল-ঢাকা আকাশপথে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। জুলাইয়ে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে বেসরকারি দুটি সংস্থা নিয়মিত ফ্লাইট চালু করে। তবে এ পথে এখনো রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান পরিবহন সংস্থা বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট বন্ধ রয়েছে।

বরিশাল বিমানবন্দর সূত্র জানায়, কোভিড পরিস্থিতির কারণে গত বছরের ২১ মার্চ বরিশাল-ঢাকা আকাশপথে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলে গত বছর ১২ জুলাই থেকে প্রতিদিন বেসরকারি নভোএয়ার একটি এবং ১৬ জুলাই থেকে ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস দুটি ফ্লাইট চালু করে।

বেসরকারি এই দুই এয়ারলাইনসের স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, ইউএস বাংলার ৬৮ আসনের দুটি উড়োজাহাজ প্রতিদিনই প্রায় সব আসন পূরণ করে চলাচল করছে। একইভাবে নভোএয়ার এয়ারলাইনসের ৬৮ আসনের একটি উড়োজাহাজও প্রতিদিন সব কটি আসন পূরণ করে যাত্রী পরিবহন করছে। ঢাকা-বরিশাল রুটটি এখন লাভজনক। আসনের টিকিট আগেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।

বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট চালু না হওয়ার বিষয়ে সংস্থাটির বরিশাল জেলা ব্যবস্থাপক সঞ্জয় কুমার কুণ্ডু বলেন, কোভিড পরিস্থিতির কারণে ঢাকা-বরিশাল রুটে গত বছরের ২১ মার্চ থেকে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রয়েছে। পুনরায় ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা থাকলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এখনো এ রুটের জন্য কোনো সময়সূচি দেয়নি। তবে এ রুটে ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।

বাংলাদেশ বিমানের বরিশাল কার্যালয় সূত্র জানায়, গত বছর ২১ মার্চ সর্বশেষ বিমানের ফ্লাইট বরিশালে এসেছিল। এর আগে সপ্তাহে ৫ দিন ৭৪ আসনের ফ্লাইট পরিচালনা করত প্রতিষ্ঠানটি।

বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট চালু না হওয়ায় স্থানীয় যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকজন যাত্রী বলেন, নতুন স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে বেসরকারি দুটি উড়োজাহাজ সংস্থা এই রুটে ভালো ব্যবসা করছে। তখন যাত্রী সংকট দেখিয়ে বিমানের ফ্লাইট বন্ধ করে রাখার বিষয়টি রহস্যজনক।

এ রহস্যকে আরও জোরালো করেছে সম্প্রতি বাংলাদেশ বিমানের বরিশাল কার্যালয়ের ২১ কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ১১ জনকে বদলি করার ঘটনায়। এ সম্পর্কে সচেতন নাগরিক কমিটির বরিশাল জেলা সভাপতি শাহ সাজেদা বলেন, বরিশাল-ঢাকা রুটে বেসরকারি এয়ারলাইনস লাভবান হওয়ায় তারা দিনে দুই থেকে চারটি ট্রিপ দিচ্ছে। সেখানে লোকসানের অজুহাতে বিমানের ফ্লাইট বন্ধ রাখা অন্য উদ্দেশ্যের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ১৯৯৫ সালে বরিশালে বিমান সার্ভিস চালু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ বিমান নানা টালবাহানা করে একাধিকবার ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে।

ব্যবস্থাপক সঞ্জয় কুমার কুণ্ডু বলেন, বরিশাল থেকে অফিস গুটিয়ে নেওয়ার বিষয়টি গুজব। কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ঢাকায় বদলি হয়েছেন। এটা নিয়মিত কার্যক্রমেরই অংশ।