এক বছরে বোরো চাষ বেড়েছে তিন গুণ

আমনের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষক বোরো চাষে ঝুঁকছেন। এখন তাঁরা বোরো রোপণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন

আবদুল জব্বারের (৫০) চার একর কৃষিজমি রয়েছে। সেচসুবিধা না থাকায় আগে তিনি বোরো ধান আবাদ করতেন না। তবে ধানের দাম বেশি হওয়ায় এবং সেচসুবিধা পাওয়ায় তিনি বোরো ধান চাষে আগ্রহী হয়েছেন। এখন বোরো রোপণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তিনি।

কৃষক জব্বারের বাড়ি পটুয়াখালী সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের ডিবুয়াপুর গ্রামে। আবদুল জব্বারের মতো এ গ্রামের কৃষক নুরু খান, রাশেদ সিপাই, দুমকি উপজেলার শাহজাহান হাওলাদার, মতলেব মাঝিসহ অনেক কৃষকই বোরো আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কৃষি অধিদপ্তর ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আমনের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষক বোরো চাষে ঝুঁকছেন। গত বছরের তুলনায় এবার জেলায় তিন গুণ জমিতে বোরো আবাদ হচ্ছে।

বিভিন্ন উপজেলায় ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলে জমিতে রোপণ করছেন। সদর উপজেলার ডিবুয়াপুর গ্রামের কৃষক আবদুল জব্বার খান বলেন, গত বছর ৬০ শতাংশ জমিতে বোরো আবাদ করে ১৬ মণ ধান পেয়েছিলেন। উৎপাদন খরচ ওঠেনি। আমন মৌসুমে অতিবৃষ্টির কারণে উৎপাদন কম হলেও ধানের দাম ভালো পেয়েছেন। এ বছর আড়াই একর জমিতে বোরো আবাদ করছেন। বোরো আবাদে সরকারি প্রণোদনা হিসেবে হাইব্রিড জাতের পাঁচ কেজি বীজ পেয়েছেন তিনি।

একই এলাকার কৃষক নুরু খান এ বছরই প্রথম বোরো আবাদ করছেন। ইতিমধ্যে দেড় একর জমিতে চারা রোপণ করেছেন। আরও কিছু জমিতে ধান রোপণ করবেন তিনি।

দুমকি উপজেলার লেবুখালী ইউনিয়নের আঠারোগাছিয়া গ্রামের কৃষক শাহজাহান হাওলাদার বলেন, গত আমন মৌসুমে অতিবৃষ্টির কারণে উৎপাদন কম হয়েছিল। তবে ধানের দাম বেশি পাওয়ায় কৃষক বেশ লাভবান হয়েছে। তাই কৃষকদের বোরো আবাদে আগ্রহ বেড়েছে।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছর পটুয়াখালীতে প্রতি মণ আমন ধান বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। আর এ বছর বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। ধানের দাম বেশি পেয়ে কৃষকেরাও বেশ খুশি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পটুয়াখালী কার্যালয়ের উপপরিচালক কৃষিবিদ হৃদয়েশ্বর দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, বাজারে ধানের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকেরা বোরো আবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছেন, যা কৃষি অর্থনীতির জন্য খুবই ইতিবাচক।