একে একে পাঁচজনকে কোপালেন যুবক, প্রাণ গেল দুজনের

নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গের সামনে লাশের জন্য অপেক্ষা করছেন ছুরিকাঘাতে নিহত দুজনের স্বজনেরা। আজ বুধবার সকালে তোলা
ছবি: প্রথম আলো

নরসিংদী সদর উপজেলার চরাঞ্চল নজরপুরে এক যুবক একে একে পাঁচজনকে কুপিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুজন মারা গেছেন। ছুরিকাহত অপর তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আজ বুধবার সকালে উপজেলার নজরপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ছগরিয়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ছুরিকাঘাতে নিহত দুজন হলেন ছগরিয়াপাড়া গ্রামের আবুল ফজলের ছেলে মো. ফরহাদ মিয়া (৫০) ও দেওয়ান আলীর ছেলে আলী আকবর (৫৬)। এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবকের নাম মো. ইউনুস আলী (৩০)। তিনি একই গ্রামের সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী মো. মান্নান মিয়ার ছেলে।

নিহত দুজনের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল নয়টার দিকে ইউনুস আলী তাঁর মায়ের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি করে বড় একটি ছুরি হাতে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। পরে পথে যাঁকে সামনে পেয়েছেন, তাঁকেই ছুরিকাঘাত করেছেন। প্রথমে ছুরিকাঘাত করেন মামাতো ভাই আল আমিনকে। বাধা দিতে এলে সম্পর্কে এক নানাকে ছুরি হাতে নিয়ে ধাওয়া দেন। নিজের জমি থেকে ফেরার পথে পেছন দিক থেকে ফরহাদ মিয়ার পিঠে ছুরিকাঘাত করেন ইউনুস আলী। এরপর ছুরিকাঘাত করেন আলী আকবরকে। এ ছাড়া ইউনুস আলীর ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন সেন্টু মিয়া ও অপর এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি। তাঁদের মধ্যে ফরহাদ মিয়া ও আলী আকবর মারা গেছেন। ছুরিকাহত অপর তিনজনকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ফাহিমা শারমিন বলেন, ফরহাদ মিয়া নামের একজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁর পিঠের এক জায়গায় ও হাতের দুই জায়গায় ছুরি–জাতীয় ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

স্থানীয় লোকজন জানান, হঠাৎ আজ সকালে এ ঘটনা ঘটান ইউনুস আলী। তিনি খুবই চুপচাপ ধরনের ব্যক্তি। কারও সঙ্গে খুব একটা কথা বলতেন না তিনি। কিছুদিন ধরে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তবে মেডিকেল প্রতিবেদনে তাঁর মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থার কথা উল্লেখ থাকায় তিনি বিদেশ যেতে পারেননি। এ নিয়ে কিছুটা হতাশার মধ্যে ছিলেন।

নজরপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ইউনুস আলী একাই পাঁচজনকে কুপিয়েছেন। নিহত হয়েছেন দুজন আর আহত হয়েছেন অপর তিনজন। পরে স্থানীয় লোকজন ইউনুসকে আটক করে পিটুনি দেন এবং দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলেন। এরপর তাঁকে নরসিংদী মডেল থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।

নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার দত্ত চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত ইউনুস আলীকে আটক করে পুলিশি পাহারায় নরসিংদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আর নিহত দুজনের লাশ উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।