এখনো আসেনি অষ্টম শ্রেণির বই

  • হবিগঞ্জে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৩০ লাখ ৫৯ হাজার বইয়ের চাহিদা রয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসেছে ২৪ লাখ ৪৭ হাজার বই।

  • মতলব দক্ষিণে মাদ্রাসায় ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যবইয়ের চাহিদা ৬৬ হাজার ২৪০টি। বরাদ্দ এসেছে ৪৩ হাজার ৯৫০টি বই।

নতুন বছরের এক মাস পেরিয়ে গেলেও, হবিগঞ্জে মাধ্যমিক পর্যায়ের শতভাগ শিক্ষার্থী এখন পর্যন্ত নতুন বই পায়নি। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত চাহিদার তুলনায় ২০ শতাংশ বই আসা বাকি। এর মধ্যে অষ্টম শ্রেণির কোনো বই পৌঁছায়নি। চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ১৪টি বিষয়ের মধ্যে মাত্র একটি বিষয়ের বই হাতে পেয়েছে।

হবিগঞ্জ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল্লাহ বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে জেলায় ৩০ লাখ ৫৯ হাজার বইয়ের চাহিদা রয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পেয়েছেন ২৪ লাখ ৪৭ হাজার বই। পর্যায়ক্রমে বই আসছে, যা পাওয়া যাচ্ছে, তা সঙ্গে সঙ্গে স্কুলগুলোতে বিলি করা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত অষ্টম শ্রেণির বই পাওয়া যায়নি। সপ্তাহখানেকের মধ্যে বাকি বই পৌঁছাবে বলে আশা করছেন তিনি।

শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অষ্টম শ্রেণির মাধ্যমিক ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য প্রায় আট লাখ বইয়ের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি সপ্তম শ্রেণির বাংলা, অঙ্ক ও ইংরেজি বই আসেনি।

জেলার কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণি সপ্তাহে এক দিন, অষ্টম শ্রেণি শনি ও বুধবার, নবম শ্রেণি রবি ও বৃহস্পতিবার এবং সপ্তাহের ছয় দিনই দশম শ্রেণির ক্লাস নির্ধারণ করা হয়েছিল। নতুন বছরের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত এ সূচি অনুয়ায়ী ক্লাস হলেও, করোনা পরিস্থিতির কারণে এখন স্কুল-কলেজ বন্ধ। শিক্ষার্থীরা যে ঘরে বসে পড়াশোনা করবে, তারও কোনো সুযোগ নেই বইসংকটের জন্য। ফলে অনলাইনেও পড়াশোনার কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না।

সরকারি একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির বই পেয়েছি। তবে সপ্তম শ্রেণির মূল বই বাংলা, অঙ্ক ও ইংরেজি বই বাকি আছে। আর নবম শ্রেণির সব বই এসেছে। তবে অষ্টম শ্রেণির কোনো বই আসেনি। পুরোনো বই দিয়ে শিক্ষার্থীদের কিছু ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।’

হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী দানিয়েল হিসাম উদ্দিন বলে, কিছু বই পেলেও বাংলা, ইংরেজি ও অঙ্ক বই এখনো পায়নি। সেগুলোই তো মূল বই। ফলে এখনো পড়াশোনা শুরু করেনি। হবিগঞ্জ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রীতি রায় বলে, ‘বিদ্যালয় খোলা থাকা অবস্থায় পুরোনো বই দিয়ে ক্লাস হয়েছে। এখন তো আবার স্কুল বন্ধ। বইসংকটের কারণে এখন না পারছি ক্লাস করতে, না পারছি বাসায় পড়তে।’

মতলব দক্ষিণ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় বেসরকারি ১৭টি দাখিল, আলিম ও ফাজিল মাদ্রাসা রয়েছে। এ বছর মাধ্যমিক পর্যায়ে মাদ্রাসায় ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ের চাহিদা ৬৬ হাজার ২৪০টি। বুধবার পর্যন্ত বরাদ্দ এসেছে ৪৩ হাজার ৯৫০টি বই। ১৪টি বিষয়ে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ের চাহিদা ১৬ হাজার ৩১০টি। বুধবার পর্যন্ত বরাদ্দ পাওয়া গেছে শুধু তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ের বই। বাকি ১৩ বিষয়ের বই পৌঁছায়নি। এ ছাড়া নবম শ্রেণির ১৯টি বিষয়ের মধ্যে আটটি বিষয়ের পাঠ্যবই এখনো পাওয়া যায়নি।

ঘিলাতলী দাখিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল বাশার বলেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ৯৫ জন। তারা এ পর্যন্ত আইসিটি বিষয়ের বই পেয়েছে। এ ছাড়া নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও কয়েকটি বিষয়ের বই পায়নি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুর রহিম খান বলেন, বিষয়টি পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।