এবার মেয়েদের বিরুদ্ধে বাবার পাল্টা সংবাদ সম্মেলন

চার মেয়ের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন তাঁদের বাবা সোহরাফ হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার বাস টার্মিনাল এলাকার একটি আবাসিক হোটেলের হলরুমে
ছবি: প্রথম আলো

নির্যাতনের অভিযোগ তোলে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বাবার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন তাঁর চার মেয়ে। এ ঘটনার পরের দিন মেয়েদের বিরুদ্ধে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করলেন তাঁদের বাবা সোহরাফ হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার বাস টার্মিনাল এলাকার একটি আবাসিক হোটেলের হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। এ সময় মেয়েদের সৎমা ফাতেমা আক্তার, সৎভাই ইস্তিজা হাসান ও তাঁদের দূর সম্পর্কের দাদা জয়নাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

সোহরাফ হোসেনের আগের স্ত্রীর চার মেয়ে হলেন মারুফা আক্তার, খাদিজা আক্তার, জেসমিন আক্তার ও সুমাইয়া আক্তার। এর মধ্যে মারুফা বিবাহিত। গতকাল বুধবার সংবাদ সম্মেলনে চার মেয়ে জানান, ১৯ বছর আগে তাঁদের মা মারা যাওয়ার পর বাবা সোহরাফ হোসেন খালা ফাতেমা আক্তারকে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকেই তাঁদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন শুরু করেন বাবা। বাবার নির্যাতনে তাঁদের দুই বোনের হাত ভেঙে যায়। এ ছাড়া তাঁদের নামে আদালতে ডাকাতির মামলাও করেন তিনি। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বড় বোন মারুফা আক্তারের বাড়িতে আশ্রয় নেন ছোট বোনেরা। মারুফার স্বামী ফজুলল করিম তাঁদের ভরণপোষণসহ পড়াশোনা করিয়েছেন।

আরও পড়ুন

এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সোহরাফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমার চার মেয়ে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো করেছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি নিজেই মেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালিয়েছি। ওরা কুচক্রী মহলের ইন্ধনে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। মেয়েরা আমাকে বাবার পরিচয় দেয় না, বাবা পর্যন্ত ডাকে না৷ ওদের জন্য পাত্র ঠিক করলেও বিয়ে করতে চায় না৷ আমি তাদের ওপর কোনো নির্যাতন করিনি। ওরা আমার বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে। আমি ওদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছি৷ বড় মেয়ে মারুফা ও তার স্বামী মো. ফজলুল করিম আমার রেকর্ডীয় জায়গায় বসবাস করেও সেটা খাস জায়গা বলে ষড়যন্ত্র করছে।’

সোহরাফ হোসেন আরও বলেন, ‘ওরা (মেয়েরা) আমার সম্পত্তির ভাগের জন্য মূলত শত্রুতা শুরু করেছে৷ আমি জীবিত থাকতে কোনো সন্তানকে সম্পত্তির ভাগ দেব না। আমি মারা যাওয়ার পর ওরা সম্পত্তির ভাগ পাবে। ওদের আমি বাড়িতে নিয়ে যেতে চাইলেও যায় না।’

মেয়েদের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা কেন করেছেন, এমন প্রশ্ন করলে সোহরাফ দাবি করেন, ডাকাতির ঘটনা সত্য, মেয়েরা ডাকাতি করে তাঁর বাড়ি থেকে ১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ডাকাতি মামলার সাক্ষী জয়নাল হোসেনের কাছে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আমি ডাকাতির কথা সোহরাফের কাছে শুনে সাক্ষ্য দিয়েছি৷ তবে আমি ডাকাতি করতে ওদের প্রত্যক্ষভাবে দেখিনি।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সৎমা ফাতেমা আক্তার বলেন, ‘ওদের মা, আমার বড় বোন পরিতুন নেছা মারা যাওয়ার পর আমিই ওদের লালনপালন করে বড় করেছি। ওরা বিভিন্ন সময় আমাকে মারধর করেছে। কুপিয়ে আহতও করেছে।’

বাবার পাল্টা অভিযোগের বিষয়ে চার বোন মারুফা আক্তার, খাদিজা আক্তার, জেসমিন আক্তার ও সুমাইয়া আক্তার বলেন, তাঁদের বাবা সোহরাফ হোসেন সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করছেন৷ তিনি তাঁদের মেয়ে হিসেবে পরিচয়ও দেন না।