‘এবারের আনন্দটা নাহয় আগামী পূজায় পুষিয়ে নেব’

দুর্গাপূজা মণ্ডপে চলছে অঞ্জলি। শুক্রবার ঠাকুরগাঁও শহরের শান্তিনগর এলাকায়
প্রথম আলো

শারদীয় দুর্গাপূজার মহাসপ্তমী আজ শুক্রবার। বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে উদ্‌যাপিত হচ্ছে দুর্গোৎসবের মহাসপ্তমী। এবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে কয়েকটি ধাপে অঞ্জলির ব্যবস্থা করেছে পূজা কমিটি।

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ঠাকুরগাঁও জেলার সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ঘোষ বলেন, ‘বিধিনিষেধ মেনে পূজা আয়োজন করতে গিয়ে আনন্দের অনেক ঘাটতি থাকবে। এটাই স্বাভাবিক। এবারের আনন্দটা নাহয় আগামী পূজায় পুষিয়ে নেব।’

ঠাকুরগাঁও জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ জানায়, কেন্দ্রীয় পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের পক্ষ থেকে পূজা উদ্‌যাপনে নানা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভিড় কম রেখে প্রতিমা দর্শন ও অঞ্জলি দেওয়ার নির্দেশনা আছে। এবার মণ্ডপের প্যান্ডেলে আলো জ্বললেও থাকছে না চোখধাঁধানো আলোকসজ্জা। সামাজিক দূরত্ব মেনে ভিড় কম রেখে প্রতিমা দর্শন ও অঞ্জলি দেওয়া হচ্ছে। মণ্ডপে থাকছে না মেলা, আরতি প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। হচ্ছে না বিজয়ার শোভাযাত্রা। পাশাপাশি নিরাপত্তার জন্য মণ্ডপে থাকছে না স্থায়ী পুলিশ ও আনসার। এসব বিধিনিষেধ মিলিয়ে এবারের দুর্গোৎসবের আয়োজনটা অনেকটাই সাদামাটা।

দুর্গাপূজা মণ্ডপে অঞ্জলি শেষে প্রণাম করছে এক দল ভক্ত। শুক্রবার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পীরবাড়ি এলাকায়
প্রথম আলো

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ ঠাকুরগাঁও জেলার সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ঘোষ আরও বলেন, এ বছর জেলায় ৪৬০টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। করোনার কারণে এবার দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ভিন্নরূপে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই না পূজায় আনন্দ করতে গিয়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে যাক। পূজা উদ্‌যাপন পরিষদ পূজা আয়োজনে নির্দেশনা দিয়েছে। বিধিনিষেধের কারণে এবার মন্দিরে আলো জ্বলবে কিন্তু বাহারি আলোকসজ্জা হবে না। আরতি হবে কিন্তু প্রতিযোগিতা হবে না, মাইক বাজবে না, তোরণ, শোভাযাত্রা ও মেলা হবে না। আমরা সাত্ত্বিক মতে শুধু পূজা উদ্‌যাপন করব।’

সকাল ১০টার দিকে হলপাড়া দুর্গাবাড়ি মন্দিরে প্রতিমার কাজ দেখতে পাঁচ শিশুকে সঙ্গে নিয়ে আসেন হলপাড়ার তরুণী বর্ণালী ঘোষ (১৮)। বর্ণালী ঘোষ বলেন, পূজা এলেই কত সুন্দর করে মন্দির সাজানো হয়। সারা দিন চলে গানবাজনা, সন্ধ্যায় আরতি। কিন্তু এবার এসবের কিছুই থাকছে না।

ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, করোনার কারণে মন্দিরে স্থায়ী পুলিশ ও আনসার না থাকলেও জেলার প্রতিটি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর ভ্রাম্যমাণ দল থাকবে।