‘ওপেন ভোট’ নিতে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে আ.লীগ প্রার্থীর হুমকির অভিযোগ

ইউপি নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে একটি ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে নৌকা প্রতীকে ‘ওপেন ভোট’ নিতে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার লাউর ফতেহপুর ইউনিয়নের হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মুজিবুর রহমান সওদাগর এই হুমকি দেন।

হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবদুল খায়ের প্রথম আলোকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থী কয়েকবার এসে ওপেন ভোট নেওয়ার জন্য আমাকে চাপ দেন। আমি রাজি না হয়ে গোপন কক্ষে ভোট দেওয়ার কথা বলি। তখন তিনি আমার নাম, বাড়ি কোথায়, কী করি ইত্যাদি বিষয় জানতে চান। একপর্যায়ে তিনি বলেন—আমি প্রিসাইডিংয়ের বাপ। পরে বিষয়টি কেন্দ্রের দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের জানিয়েছি।’

জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর, বাঞ্ছারামপুর ও সরাইল উপজেলার ৩২টি ইউপি নির্বাচনে ভোট চলছে। আজ রোববার সকাল ৮টা থেকে ৩১৮টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, ভোট শুরুর পর সকাল সোয়া আটটার দিকে নবীনগর উপজেলার লাউর ফতেহপুর ইউনিয়নের হাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে যান আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মুজিবুর রহমান সওদাগর। কেন্দ্রটিতে সকাল থেকেই ভোটারদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। সে সময় নৌকা প্রতীকে ওপেন ভোট নিতে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আবুল খায়েরকে হুমকি ও চাপ দেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। কিন্তু প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এতে রাজি হননি। তখনই মুজিবুর রহমান বিষয়টি নিয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তার ওপর চটে যান। কেন্দ্রে হট্টগোল হলে পুলিশ গিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

লাউর ফতেহপুর ইউপিতে মুজিবুর রহমানসহ আটজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার চেষ্টা করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মুজিবুর রহমানের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে ওপেন ভোট নেওয়ার জন্য চাপ দিইনি। অভিযোগটি সঠিক নয়।’

লাউর ফতেহপুর ইউনিয়নের পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্সের ইনচার্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী মাসুদ ইবনে আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রিসাইডিং কর্মকর্তার ফোন পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রে যাই। কেন্দ্রে গিয়ে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি পাইনি। ভোটের পরিবেশ অনেক ভালো। শান্তিপূর্ণ ভোট চলছে।’