ওবায়দুল কাদের মিথ্যুক, প্রতারক: কাদের মির্জা

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। আজ বুধবার সকালে বসুরহাট পৌরসভা মিলনায়তনে
ছবি: প্রথম আলো

বড় ভাই ওবায়দুল কাদেরকে আবারও মিথ্যুক বলেছেন ছোট ভাই নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। সেই সঙ্গে তিনি তাঁকে (ওবায়দুল কাদের) প্রতারক ও বিশ্বাসঘাতকও বলেছেন।

কাদের মির্জা আরও বলেন, ওবায়দুল কাদের কোনো নেতা নন, নেতা হওয়ার যোগ্যতা তাঁর নেই। আজ বুধবার সকালে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

কাদের মির্জার ওই বক্তব্য তাঁর ফেসবুক পেজ থেকে লাইভ প্রচার করা হয়। বসুরহাট পৌরসভার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ওই আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলে উপজেলা আওয়ামী লীগের কাদের মির্জা ঘোষিত কমিটির সভাপতি ইস্কান্দার হায়দার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুছসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভার আগে কাদের মির্জার নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা বসুরহাটের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

কাদের মির্জা বলেন, ‘একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনের সব শিক্ষাই হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর জীবনে পাওয়া যায়। আমরা সবার কাছে প্রত্যাশা রাখব, মুহাম্মদ (সা.)–এর দেখানো পথ অনুসরণ করে আমরা শান্তি–সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করব। আমাদের স্মরণ রাখতে হবে আমরা কার উম্মত। সব নবী, রাসুলের শ্রেষ্ঠজন মুহাম্মদ (সা.)–এর উম্মত আমরা। আমাদের প্রাণের নবী মৃত্যুর সময়ও উম্মতের কথা ভোলেননি। আমরা তাঁর দেখানো পথ অনুসরণ করে আমাদের ইমানি দায়িত্ব আমরা পালন করব। পৃথিবী থেকে দূর করব সাম্প্রদায়িকতা। মানবতার মহান আদর্শ বুকে লালন করে আমরা এগিয়ে যাব।’

কাদের মির্জা বলেন, ‘আজকে যে ষড়যন্ত্র–চক্রান্ত চলছে এই কোম্পানীগঞ্জে, এটা দুঃখজনক। আজকে যাঁরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তাঁদের ধরে নিয়ে সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যা মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখাচ্ছে। আর প্রতিপক্ষের লোকদের ধরে কয়েক দিন পর ছেড়ে দিচ্ছে। গতকালও মুছাপুরের শাহীন চেয়ারম্যান নামের একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ সে মুজাক্কির হত্যার মূল আসামি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইর পরিদর্শক মোস্তাফিজ আমাদের লোকদের ধরে ধরে মুজাক্কির হত্যা মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখাচ্ছে, আর প্রতিপক্ষের লোকদের ধরে টাকা নিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে।’

বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জা উপস্থিত দলীয় নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘এটা কি চলতে দেওয়া যায়? এটার জন্য দায়ী কে? ওবায়দুল কাদের। আমাকে বলেছে, সব জামিন আমি করাব। মিথ্যুক, প্রতারক, বিশ্বাসঘাতক। সে কোনো নেতা নয়, নেতার চরিত্র তার নেই। সে তার স্ত্রীর (ইশরাতুন্নেসা কাদের) কথায় চলে। তার স্ত্রীর কোম্পানীগঞ্জের কোনো কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ নেই। তার যোগাযোগ আছে বাদইল্যা (উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল), রাহাইত্যা (কাদের মির্জার ভাগনে ফখরুল ইসলাম রাহাত), খিজিরগার (উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খান), কানা মইনজার (কাদের মির্জার আরেক ভাগনে মাহবুবুর রশিদ মঞ্জু) সঙ্গে।’

কাদের মির্জা চৌমুহনীতে হিন্দুদের মন্দির, দোকানপাট ও বাড়িঘরে হামলার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘আজকে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আমি বেশি কথা বলতে চাই না। নোয়াখালীতে এত বড় ঘটনা ঘটল। চৌমুহনীতে একজনকে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। অনেকে এখনো হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। অনেকের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে, মন্দির জ্বালিয়ে দিয়েছে, দোকানপাট লুট করেছে। এখানকার এসপিকে সরানো হয়নি। অথচ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এসপিকে সরাইছে। এই এসপি কী জন্য রাখা হয়েছে, আমাদের জন্য। আমাদের ওপর অত্যাচার চালানোর জন্য ওবায়দুল কাদের রেখেছে, জুলুম করার জন্য রাখা হয়েছে।’

কাদের মির্জা বলেন, ‘আজকে আমি ভীত নই। সব প্রতিকূল পরিবেশকে, বাধাকে অতিক্রম করে ইনশা আল্লাহ আমরা আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাব। আমরা সাহস করে সত্যা কথা বলব। অন্যায়–অবিচার জুলুমের বিরুদ্ধে আমরা সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করব। আমি সবার প্রতি আহ্বান জানাব, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে জীবনের প্রতিটি স্তরে মহানবীর আদর্শ লালন করব, পালন করব।’