ওসি প্রদীপসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে আরও দুই মামলা

কক্সবাজার আদালতে সিনহা হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।
প্রথম আলো ফাইল ছবি

চাঁদার টাকা না পেয়ে দুই ব্যক্তিকে ক্রসফায়ারে হত্যার অভিযোগে টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে আরও দুটি পৃথক মামলা হয়েছে। আজ বুধবার কক্সবাজার আদালতে এই মামলা হয়।

একটি মামলার বাদী টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের খারাইঙ্গাঘোনা এলাকার মুছা আকবরের স্ত্রী শাহেনা আকতার। অপর মামলার বাদী একই ইউনিয়নের কাঞ্জরপাড়ার আবদুর রহমানের ছেলে হাফেজ আহাম্মদ। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল উদ্দিনের আদালতে দায়ের হয় মামলা দুটি।

গত কয়েক দিনে কক্সবাজারের বিভিন্ন আদালতে ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ অন্যান্য পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদার টাকা না পেয়ে ক্রসফায়ারে বিভিন্ন লোককে হত্যার অভিযোগে আরও চারটি পৃথক মামলা করা হয়েছে।

শাহেনা আক্তারের করা মামলার আইনজীবী রিদুয়ান আলী সাংবাদিকদের বলেন, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল উদ্দিন মামলাটি আমলে নিয়ে ওই সময়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানার দায়ের করা মামলার কাগজপত্র আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। এই মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে টেকনাফের হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মশিউর রহমানকে। ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে করা হয় ২ নম্বর আসামি। মোট ২৭ আসামির মধ্যে সর্বোচ্চ ২২ জন পুলিশের সদস্য। অন্যরা গ্রামের মানুষ।

ওসি প্রদীপ কুমার দাশ অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার প্রধান আসামি হিসেবে জেলা কারাগারে অবস্থান করছেন। এর আগে চার দফায় টানা ১৫ দিন তদন্তকারী সংস্থা র‍্যাবের রিমান্ডে ছিলেন তিনি।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ২৮ মার্চ রাতে পুলিশ মামলার বাদী শাহেনা আক্তারের স্বামী মুছা আকবরকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তিন লাখ টাকা চাঁদা নিয়েও ওই দিন ভোররাতে গুলি করে হত্যা করা হয় মুছা আকবরকে।

হাফেজ আহাম্মদের করা মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল দুপুরে পুলিশ বাড়ি থেকে তুলে নেয় তাঁর (বাদীর) ছোট ভাই সাহাব উদ্দিনকে। পরে ক্রসফায়ার থেকে বাঁচিয়ে দেওয়ার কথা বলে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ৫০ হাজার টাকা দেওয়াও হয়। কিন্তু চাঁদার অবশিষ্ট ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা না দেওয়ায় সাহাব উদ্দিনকে ২০ এপ্রিল রাতে কাঞ্জরপাড়ার ধানখেতে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।

এই মামলায় মোট ২৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৫ জন পুলিশের সদস্য। মামলায় টেকনাফ থানার এসআই দীপক বিশ্বাসকে ১ নম্বর, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কাঞ্জরপাড়ার বাসিন্দা আমিনুল হককে ২ নম্বর ও টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে।

এই মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী রিদুয়ান আলী সাংবাদিকদের বলেন, এই মামলাও আমলে নিয়েছেন আদালত। ওই সময়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানার দায়ের করা মামলার কাগজপত্র আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

ওসি প্রদীপ কুমার দাশ অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার প্রধান আসামি হিসেবে জেলা কারাগারে অবস্থান করছেন। এর আগে চার দফায় টানা ১৫ দিন তদন্তকারী সংস্থা র‍্যাবের রিমান্ডে ছিলেন তিনি।