ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতিসহ ৮ জনের নামে মামলা

কক্সবাজার জেলার মানচিত্র

কক্সবাজারের পেকুয়ার ভারুয়াখালী গ্রামে নাজেম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ আটজনের নামে মামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে নিহত ব্যক্তির স্ত্রী শারমিনা বেগম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলায় আরও ৭ থেকে ৮ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

মামলায় নাম উল্লেখ করা আসামিরা হলেন বারবাকিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান ও ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ওরফে বনের রাজা জাহাঙ্গীর (৪০), তাঁর বাবা জাফর আলম (৬২), নেজাম উদ্দিন (৩৫), জসিম উদ্দিন (৩৫), শাহাব উদ্দিন (৪০), আল মুমিন (২৫), মো. আরমান (২৮) ও মো. নুরুজ্জামান (৪৫)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, জাহাঙ্গীরের সঙ্গে নেজাম উদ্দিনের বনভূমি দখল ও বনের গাছ কাটাসহ এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জের ধরে জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে মামলার আসামিরা নেজাম উদ্দিনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেন। আসামিরা পরিকল্পিতভাবে ফোনে ডেকে নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে নিহত ব্যক্তির স্ত্রী মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন।

স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, বারবাকিয়া ইউনিয়নের পাহাড়িয়াখালী, ভারুয়াখালী গ্রামসহ পাহাড়ের পূর্ব অংশ নিয়ে জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে একটি ‘সন্ত্রাসী বাহিনী’ রয়েছে। নিহত নেজাম উদ্দিন ওই বাহিনীর একনিষ্ঠ সদস্য ছিলেন। পরে ওই বাহিনীর সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি হলে নেজাম বিদেশে চলে যান। তিন বছর আগে বিদেশ থেকে ফিরে আসেন। এরপর চট্টগ্রামে অবস্থান করেন এক বছর। সুযোগ বুঝে দুই বছর আগে তিনি ভারুয়াখালী এলাকায় ফিরে একটি অংশে নিজের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা নিয়ে জাহাঙ্গীর ও তাঁর পক্ষের মধ্যে কয়েকবার পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

পুলিশ জানায়, আওয়ামী লীগের নেতা জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে খুন, মারামারি, অস্ত্র ও বন আইনে অন্তত ৩০টির বেশি মামলা রয়েছে। কিছু মামলায় তিনি জামিনে থাকলেও হত্যাসহ কয়েকটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে পরোয়ানা আছে।
জাহাঙ্গীরকে আটকের বিষয়ে পুলিশের ভাষ্য, জাহাঙ্গীরের অবস্থান বারবাকিয়ার পাহাড়িয়াখালী ও ভারুয়াখালীর পাহাড়কেন্দ্রিক। তাঁর চলাফেরা জনসম্মুখে নেই। এ কারণে তাঁকে ধরা যাচ্ছে না। তা ছাড়া কয়েকবার অভিযান চালিয়েও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁকে ধরতে পারেনি।

পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, হত্যাকাণ্ডের পরপরই আসামিরা গা ঢাকা দিয়েছেন। তবে তাঁদের ধরতে বিভিন্ন স্থানে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।